এত দিন অনেক হয়েছে ‘চায়েপে চর্চা’। চায়ের কাপের সামনে তুফান তুলেছে দেশবাসী। এবার সামনে পরীক্ষা, তাই ‘পরীক্ষাপে চর্চা’ করার সময় এসেছে। সেই চর্চাতেই যোগ দেবে পড়ুয়ারা। কিন্তু পরীক্ষার আগে কার সঙ্গে এই চর্চা চলবে, তা জানেন কি? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! আজ, সোমবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২০০০ জন পড়ুয়া এসে জড়ো হবে দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে। পরীক্ষার আগে তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবে। আরও পোক্ত করে নিতে পারবে নিজেদের প্রস্তুতি। মোদী সরকারের সময়কালে এটি এই অনুষ্ঠানের তৃতীয় সংস্করণ বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সম্পাদক আরসি মীনা জানিয়েছেন, ২০০০ পড়ুয়ার মধ্যে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে ৫০ জন বিশেষ ভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের উপর৷ তাা একটি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে, যার মূল বিষয়বস্তু হল পরীক্ষার বাড়তি চাপ। সবচেয়ে সেরা আঁকাটি দেখানো হবে এই অনুষ্ঠানে। এছাড়াও একটি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা হবে, যাতে অংশ নেবে ১০৫০ জন পড়ুয়া। পাঁচটি বিষয়ের উপর তাদের প্রবন্ধ লিখতে হবে। এই প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার ফলাফল অনুযায়ী যারা নির্বাচিত হবে, তারা সুযোগ পাবে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি প্রশ্ন করার।
সূত্রের খবর, ইদানীং পড়ুয়াদের মধ্যে পড়াশোনা নিয়ে যে মানসিক চাপ বাড়ছে, তাই নিয়েই বিশেষ চিন্তায় রয়েছেন মোদীজি। সে কারণেই সরাসরি ক্লাস সিক্স থেকে টুয়েলেভ-এর পড়ুয়াদের মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত বছরেও ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পথ দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, বইয়ের বাইরেও নানা বিষয়ে সচেতন হতে হবে পড়ুয়াদের। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার নানা সুযোগসুবিধা কাজে লাগাতে হবে, ব্যবহার করতে হবে টেকনোলজি। তবেই এখনকার সময়ে সহজ হবে পড়াশোনা। এই বছর মোদী এ বিষয়ে কী কী পরামর্শ দেন, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
বোর্ড পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর তরফে এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে ৷ এ যেন পরীক্ষার আগে প্রধানমন্ত্রীর পেপ টক। শুধু সামনাসামনি নয়, যে সব পড়ুয়ারা দূরে রয়েছে, তাদের মেল করে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঠানো প্রশ্নের উত্তরও দেবেন মোদী।
তবে বিরোধীরা এই অনুষ্ঠানের সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তাঁদের দাবি, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’য় দেশের কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আমন্ত্রিত নন। এমনকি স্কুল-পড়ুয়ারাদের সঙ্গে আসা শিক্ষক, অভিভাবকদেরও প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে না। কঠিন কোনও প্রশ্ন এড়িয়ে যেতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, বোর্ড পরীক্ষার ভয় কাটাতেই এই অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে কলেজপড়ুয়াদের কোনও যোগই নেই। কিন্তু অনেকের দাবি, সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি যখন আন্দোলনে সামিল হয়েছে, তখন তাঁদের প্রশ্নও শোনা দরকার। তাই এই পরিস্থিতিতে সোমবার মোদী যখন মঞ্চে থাকবেন, তখন রাস্তায় প্রতিবাদ জানাতে মিছিল করবেন কলেজ-পড়ুয়ারা।