জান্নাত : স্বর্গের পতিতালয়

ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জীবনে সব থেকে বড় স্বপ্ন বা খোয়াইশ হলো মৃত্যুর পর জান্নাত লাভ । পাঠক, কি এই ‘জান্নাত’ ? আসুন একটু জেনে নি :
পার্থিব পতিতালয়ের মত অপার্থিব জান্নাতেও থাকবে অঢেল মদ, নারী ও সুস্বাদু খাবারদাবার, তবে ফারাক থাকবে।
➤ আল্লার জান্নাতে মদ যে যতই খাক না কেন, কারুর হ্যাংওভার হবে না।
➤ আল্লার জান্নাতে(পতিতালয়ে) কারও হাগা মুতার কোনো সিন নেই ! কারও কোন অসুখ বিসুখের সিন নেই ।
➤ জান্নাত নামক অপার্থিব বা স্বর্গীয় পতিতালয়ে সবাই সুস্বাদু জান্নাতি খাবার খাবে, জান্নাতি গাছের অতিশয় সুস্বাদু ফলমূল খাবে।
➤ পুরুষদের জন্য স্বর্গের পতিতালয় জান্নাতে থাকবে হরিণ নয়না ১৬ বছর বয়সী চিরকুমারী সুন্দরী রমণীরা । তাদের পোশাক হবে ট্র্যান্সপ্যারেন্ট ।
➤ এই চিরকুমারী সুন্দরী রমণীরা হলো হুর । তারা এত ফর্সা যে তাদের গােড়ালির হাড় পর্যন্ত দেখা যায় !
➤ এই হুরেদের সাথে যৌন মিলন ৬০০ বছর স্থায়ী হবে (Aldous Huxley, Moksha, Chatto & Windus, London, 1980, p-112)।
➤ সমকামী বা উভকামী পুরুষদের জন্য আল্লার পতিতালয় ‘জান্নাত’ এ থাকবে কোমলমতি অগণিত কিশাের, যাদের সঙ্গে জান্নাতবাসীরা মনের সুখে মেতে উঠবে সমকামে বা পায়ুকামে ।
জান্নাত নামক আল্লার এই স্বর্গীয় পতিতালয়ে যাবার জন্য দুনিয়ার তামাম ধর্মান্ধ মুসলমান নামাজ, রােজা আর হজ করে চলেছে। এ টি এম রফিকুল হাসান ‘আট বেহেস্ত ও সাত দোজখ’ (মুসলীম লাইব্রেরী, কলকাতা) নামে একখানা বই লিখেছেন । বইতে তিনি ‘জান্নাত’ নামক আল্লার পতিতালয়ের ব্যাপারে আরও অনেক ব্যাপারে খোলসা করে লিখেছেন : ‘আল্লার জান্নাতের একটা আঙুরে যে রস হবে তাতে একটা পিপে ভর্তি হয়ে যাবে। আল্লার জান্নাতের একটা খেজুর হবে ১২ হাত লম্বা এবং তাতে কোন বীচি থাকবে না। আল্লার জান্নাতের গাছপালা হবে বিচিত্র রকম। তারা যে কোন রকমের নড়াচড়া তাে করবেই, এমন কি হাঁটাচলাও করবে। যদি কোন জান্নাতবাসী দূরবর্তী কোন গাছের ফল খেতে ইচ্ছে করে, তবে সেই গাছ তার কাছে এগিয়ে আসবে এবং মুখে ফল খুঁজে দেবে।’
উপরেই লিখেছি যে, কোন জান্নাতবাসী কোন হুরের সাথে সেক্স শুরু করলে তা ৬০০ বছর স্থায়ী হবে, অর্গাজমের চূড়ান্ত মুহূর্তে তার বীর্য স্থলন কিরকম হবে ? রফিকুল হাসান তার উপরোক্ত বইতে লিখছেন : আল্লার রসুল মহম্মদকে এক অনুচর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে মহম্মদ তাকে বলেছিল : আল্লার জান্নাতের বীর্য স্খলনের এক্সপিরিয়েন্স পৃথিবীতে বীর্য স্খলনের এক্সপিরিয়েন্সের থেকে একদমই ভিন্ন ! আল্লার পতিতালয় ‘জান্নাত’ এ বীর্য হবে সুগন্ধী বাতাস সম । পৃথিবীতে বীর্য স্খলনের পর পুরুষ দুর্বল হয়ে পরে ও তার মিলন ইচ্ছা তাৎক্ষণিক হ্রাস পায়, কিন্তু স্বর্গের পতিতালয় জান্নাতে, পুরুষ বীর্যস্খলনের পরে আরো বলশালী হয়ে উঠবে আর তার মিলন ইচ্ছে লক্ষ গুণ বেড়ে যাবে !
ইসলামাবাদের ওয়াসিম সাজ্জাদ Ministerial Standing Committee on Scientific and Technological Cooperation (CONSTECH), সংস্থার সভাপতি ১৯৯৮ সালে একটি সভায় দুঃখ করে বলেছিলো : ও আই সি (বা Organisation of Islamic Countries) র দেশগুলোতে জনসংখ্যার অনুপাতে ৪০ লক্ষ বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনীয়ার থাকা উচিত, কিন্তু বাস্তযে আছে মাত্র ২ লক্ষ। পাঠক, কেন বলুন তো ? ভাবছেন বুঝি ? আমি বলে দিচ্ছি উত্তর, আপনারা শুনুন :
জিহাদ হল আল্লার সর্বশ্রেষ্ঠ উপাসনা, যার মাধ্যমে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, লুঠ, নারী ধর্ষণ, হত্যা যে কোনো প্রকারে বিশ্বে ইসলামকে ছড়িয়ে দিতে হবে আর জিহাদে নিবেদিত প্রাণ সাচ্চা মুসলমানের মৃত্যুর পর ‘জান্নাত’ কনফার্মড । এই বিশ্বাসের ধর্মালম্বীদের মধ্যে বহুল সংখ্যায় বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার খোঁজাটা বাতুলতা হয়ে গেল না ?

রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.