থামছে না পাক কার্যকলাপ। ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল পাক সেনা। ভারতের সীমানা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল থেকে। জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার বালাকোট সেক্টরে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। গুলিবর্ষণের ধরণ দেখে মনে করা হচ্ছে ছোট এবং বড় অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি ছুঁড়ছে পাকিস্তান। তবে শক্তহাতে মুখের উপর জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।
কিছুদিন আগেই, পুঞ্চে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল পাকিস্তান। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলি চালায় পাকিস্তানি সেনা। ঘটনায় শহিদ হন এক ভারতীয় জওয়ান। পুঞ্চের মেন্ধর মহকুমার বালাকোট সেক্টরের ঘটনা। জানা গিয়েছে শহিদ জওয়ানের নাম রোহিন কুমার। তিনি হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন।
এর আগে ২৭ জুলাইও পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলি চালায় পাকিস্তান সেনা। আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পুঞ্চের মানকোট সেক্টরে মর্টার শেল ছোড়ে তারা। ভারতীয় জওয়ানরাও যোগ্য জবাব দেয়। এদিকে কাশ্মীরে জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পরপর অস্ত্র উদ্ধার করছে সেনা।
২৩ জুলাই পুঞ্চ জেলার কাসবা সেক্টরে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি সেনা। পালটা জবাব দেয় ভারতীয় সেনা। ১৭ জুলাইও পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলি চালায় পাকিস্তান।
ফলে, এক পরিবারের তিন সদস্য নিহত হন। এছাড়া ১৪ জুলাই রাজৌরিতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলির লড়াই চলে। অপর একটি ঘটনায় খারি কারমারা সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় চলে গোলা বর্ষণ। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং গ্রামগুলিতে গোলা বর্ষণ করার জন্য স্থানীয়রা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।
এদিকে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই কাশ্মীরে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। এই আবহে বেশ কিছু দিন ধরেই সেনা অভিযান চালিয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের খতম করতে উদ্যোগ নিয়েছে সেনা।
এদিকে পাকিস্তানও এই আবহে জঙ্গি অনুপ্রবেশে সাহায্য করতে পর পর সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে। লাদাখের সুযোগে পাকিস্তান তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের ভারতে ঢুকিয়ে নাশকতার ছক কষছে। আর পাকিস্তানের সেই অভিসন্ধিতে মদত দিচ্ছে চিন।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভারতকে কাবু করতে পাক জঙ্গিদের মদত নিচ্ছে বেজিং। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। কাশ্মীরে নাশকতা চালানোর জন্য লালফৌজ পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন অল বদরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
সূত্রের খবর, ভারতে ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ পাক জঙ্গি অনুপ্রবেশ করে আত্মগোপন করে রয়েছে। তারা এখন স্থানীয় কাশ্মীরি জঙ্গিদের সঙ্গে ফের নতুন করে যোগাযোগ স্থাপন করছে।
বিনাপ্ররোচনায় ২০১৯-এ পাক গোলাবর্ষণ হয়েছে ২,৫০০ বার। ২০১৮ সালে সংখ্যাটা ছিল ১,৬২৯ বার। সবচেয়ে কমবার পাকিস্তানের তরফে গোলাবর্ষণ হয়েছে জুন ও জানুয়ারি মাসে। যথাক্রমে ১৮১ ও ২০৩ বার। রিপোর্ট দেখা গিয়েছে, ২০১৯-এর ৫ অগস্ট থেকে দিনে গড়ে ১০ বার করে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান।
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ভারতীয় সেনার দাবি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণরেখায় ২,০২৭ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাক বাহিনী। সূত্রের খবর, এই একই সময়ে এখনও পর্যন্ত ৯৮ পাকজঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে।
সীমান্ত পেরিয়ে কাশ্মীর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় এই ৯৮ জঙ্গি নিহত হয়। রিপোর্টে প্রকাশ, ভুল বুঝিয়ে ৫২ কাশ্মীরি যুবককে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনে শামিল করার চেষ্টা হয়েছিল। তাঁদের মূলস্রোতে ফেরাতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।