দু’দিন আগে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে এক হিন্দু তরুনীকে বিয়ের আসর থেকে তুলে গিয়ে জোর করে ধর্মান্তকরণ করিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছিল শাহরুখ গুল নামের এক পাকিস্তানি যুবকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা নিয়েই নিজেদের প্রতিবাদ জানাতে নয়াদিল্লিস্থিত পাকিস্তানের হাই কমিশনের শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠাল ভারত সরকার।
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, হাই কমিশনার না আসতে পারলেও শীর্ষ কোনও আধিকারিককে যেন পাঠানো হয়। ওই যুবতীকে অপহরণ করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। তারা চাইছে কূটনৈতিক স্তরে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে।
অপহরণকারীরা বিয়ের সার্টিফিকেটও পাঠিয়ে দিয়েছে যুবতীর পরিবারের কাছে। যদিও ওই সার্টিফিকেট ভুয়ো বলেই দাবি যুবতীর পরিবারের।
ঘটনা সিন্ধুর মাতিয়ারি জেলার। বিয়ের কনেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরণের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছিল সিন্ধু প্রদেশ। ২৪ বছরের মেয়েটির নাম ভারতী বাই। করাচি থেকে ২১৫ কিলোমিটার দূরে মাতিয়ারির হালা শহরে বসেছিল বিয়ের আসর। ভারতীর বাবা কিশোর জানিয়েছেন, বিয়ে সবে শুরু হয়েছিল। তখনই সেখানে অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ে জনা কয়েক যুবক। জোর করে মেয়েকে বিয়ের আসর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারাই খবর পাঠায় ভারতীর ধর্মান্তরণ করিয়ে তাকে বিয়ে করেছে শাহরুখ গুল নামে এক যুবক। সেই বিয়ের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভারতীর পরিবারের দাবি, ধর্মান্তরণের পরে ভারতীর নাম বদলে বুশরা রাখা হয়েছে। বিয়ের যে নথি তাঁদের হাতে এসেছে, সেটাও ভুয়ো বলে দাবি করেছেন মেয়ের বাবা কিশোর। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে শাহরুখ গুল দাবি করেছেন যে, ভারতীর ধর্ম পরিবর্তন করানো হয়েছিল গত বছর ১ ডিসেম্বর। কিন্তু সেটা মানতে চায়নি তাঁর পরিবার। উল্টে ভারতীর বাড়ির লোকজনই নাকি মেয়েকে জোর করে ধরে এনে এক হিন্দু যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিচ্ছিল। তাই বিয়ের আসর থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।
এর আগে করাচির জিয়া কলোনির এক খ্রিস্টান কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্মান্তরণ করিয়ে বিয়ের অভিযোগ ওঠে এক মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় তোলপাড় হয় করাচি। হুমা ইউনিস নামে ওই কিশোরীর পরিবার দাবি করে, তাদের মেয়েকে জোর করে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
তাম্বু সাহিব গুরুদ্বারের পুরোহিত ভগবান সিংয়ের মেয়ে জগজিৎ কৌরকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্মান্তরণ করানোর অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল লাহোর। গত এপ্রিলেই পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের এক হিন্দু কিশোরীকে ধর্মান্তরণ করিয়ে জবরদস্তি বিয়ের অভিযোগ উঠেছিল। বিয়ের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছিল। সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি জেলার বাসিন্দা দুই বোন রিনা ও রবীনাকে ধর্মান্তরণ ও বিয়ের অভিযোগে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছিল ইমরান খানের প্রশাসন।