গত শুক্রবার ফণীর দাপটে তছনছ হয়েছে ওডিশা। ১৮০ কিমি ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল বিধ্বংসী এই সাইক্লোনের। ওড়িশার পূর্ব উপকুল সহ সমগ্র রাজ্যেই তার প্রভাব পড়েছে। ইলেকট্রিসিটি বন্ধ থাকা থেকে শুরু করে গাছ পড়ে যাওয়া, বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়া সবই ছিল এই তাণ্ডবে। গোটা ঘটনায ওই রাজ্যে মারা গেছেন ১৬ জন। ওডিশার সরকার একদিন আগে থেকেই সমস্তরকম ব্যবস্থা নিয়েছিল যাতে মানুষজনকে নিশ্চিত আশ্রয়ে রাখা যায়, কিন্তু এড়ানো যায়নি অনেক অনভিপ্রেত ঘটনাই।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য পুলিশের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনই এক ছবি এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন মহিলা পুলিশ অফিসার তাঁর বাইকে আরও দুজন মহিলাকে চাপিয়ে নিয়েছেন, পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট জায়গায়।ওডিশার কেন্দ্রাপাড়ার তালচুয়া পুলিশ স্টেশনের ওই মহিলা পুলিশ অফিসার গ্রাম খালি করছিলেন, যাতে গ্রামবাসীরা বিপদে না পড়েন।এই ছবি যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে নেট দুনিয়ায়। এছাড়াও দেখা গেছে, গঞ্জাম এলাকায় আরও একজন মহিলা পুলিশ অফিসার একজন বৃদ্ধাকে পাঁজাকোলা করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন, যাতে ওই বৃদ্ধা কোনও সমস্যায় না পড়েন।
ওডিশার রাজ্য সরকার শেষ দুদিনে মোট ১২ লাখ মানুষকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিয়েছে, যাতে তাঁদের বিপদ থেকে বাঁচানো যায়। এরই মাঝে সে রাজ্যের পুলিশের এই জাতীয় ছবি এবং ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেগুলোয় পুলিশকে দেখা গেছে রাস্তার গাছ পরিষ্কার করতে, লোকজনকে উদ্ধার করতে আবার কারও মুখে খাবার তুলে দিতে। দুর্যোগ কমানোর জন্য রাষ্ট্রসংঘ ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের প্রাথমিক সতর্কবার্তাগুলোর প্রশংসা করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফণী উপকূলীয় শহর পুরীতে যেভাবে প্রভাব ফেলেছে, তাতে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এবং নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সফল হয়েছে ওডিশা সরকার।
ফণীর এই দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়েছে গোটা ওডিশাই। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরী ও ভুবনেশ্বর। আবহাওয়া দফতরের এক কর্মকর্তা বলছেন, ফণী ওডিশায় তছনছ করে যখন পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে তখন তার জোর অনেকটাই কমে গেছে, তার গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি হয়েছে। পশ্চিমবাংলায় দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা জুড়ে সতর্কবার্তা দেওয়া ছিল। লাল সতর্কতা জারি ছিল সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে। মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত এই সাইক্লোন বাংলাদেশের দিকে চলে যায়। পশ্চিমবঙ্গে এর বিশেষ প্রভাব পড়েনি।