জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ তথা এনআরসি নিয়ে যখন রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে তখন খোদ অসমে দাঁড়িয়ে এ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ‘পোস্ট কলোনিয়াল অসম’ নামক একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “এনআরসি শুধু বর্তমানের নথি নয়। এটা আগামীর ভিত্তি।”
উদ্বেগ, আশঙ্কা, গুজব—সব মিলিয়ে এনআরসি এখন সাধারণ মানুষের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি এদিনের অনুষ্ঠানে বলেন, “কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম সঠিক তথ্য পরিবেশন করছে না। ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।”
অসমের এনআরসিতে নাম তোলার আবেদন করেছিলেন ৩,৩০,২৭,৬৬১ জন। তার মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা থেকে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। বাদ পড়া ব্যক্তিরা তালিকা প্রকাশের ১২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও জানানো হয়। কিন্তু সার্বিক ভাবে অসমের জনমানসে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ।
এমনকী অসমের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রকাশ্যে। এর মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অসমের এনআরসি প্রক্রিয়ার মূল আধিকারিক প্রতীক হাজেলাকে।
আগামী ১৭ নভেম্বর কর্মজীবন থেকে অবসর নেবেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। এর মধ্যেই তাঁর ছ’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় শোনানোর কথা। সেই তালিকায় সবার উপরে রয়েছে ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায়। রয়েছে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশাধিকারের পুনর্বিবেচনা মামলার রায়ও। কিন্তু এদিনের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তাঁর মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।