জাল ভ্যাকসিন তথা দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) কান্ড নিয়ে এখন রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এরই মাঝে বেনিয়াপুকুর থেকে ফের পুলিশের জালে ধরা পড়েন একজন ভুয়ো আধিকারিক। আসিফুল হক নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স অফিসার বলে পরিচয় দিলেও তার কাছে পাওয়া যায়নি কোনো পরিচয় পত্র। যার জেরে শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে ভুয়ো আধিকারিকদের নিয়ে এই মুহূর্তে রীতিমতো অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য প্রশাসন। শুধু কলকাতা নয় এবার ভুয়ো আধিকারিকের খোঁজ মিলল নিউ ব্যারাকপুরেও।
জানা গিয়েছে, রিচার্ড গ্যাসপার, শুভ্রনীল দত্ত ও উমেশ ঝা নামের তিন ব্যাক্তি মিলে চালাত একটি প্রতারণা চক্র। মূল পান্ডা অবশ্য রিচার্ড গ্যাসপার। কখনও নিজেদের সিআইডি অফিসার কখনও বা নিজেদের থানার আইসি পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতেন তারা। এমনকি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচয় ছিল তাদের। যার জেরে টেন্ডার পাইয়ে দেবার নাম করে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
তাদের এই প্রতারণার শিকার হন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা অর্কপ্রভ মজুমদার। তিনি জানান পুলিশের কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। অবশেষে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন অর্কপ্রভ। প্রায় ছবছর আগে তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় অর্ক বাবুর। ব্যবসায়ী অর্কবাবুকে রাস্তায় লাইট লাগানোর টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। বেশ কয়েকবার মিলিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা হস্তগত করে রিচার্ড এবং তার দল।
অর্কবাবুর মনে হয় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টে শুনতে হয় প্রাণনাশের হুমকি। তার অভিযোগ, জোর করে তাকে দিয়ে সাদা কাগজে হস্তাক্ষরও করিয়ে নেওয়া হয়। নিউ ব্যারাকপুর থানায় অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি বলেই দাবি অর্কবাবুর। শেষ পর্যন্ত আদালতে মামলা করায় আপাতত সামনে এলেন দোষীরা। জানা গিয়েছে নিউ ব্যারাকপুর থানার বিরুদ্ধেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন অর্কপ্রভ।
এমনিতেই দেবাঞ্জনের ঘটনা অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে প্রশাসনকে। তার কাছ থেকে শুধু জাল পরিচয় পত্র উদ্ধার হয়েছে তাই নয়, উদ্ধার হয়েছে কলকাতা পুরসভার জাল লেটারহেডও। এবার ফের একবার ভুয়ো আধিকারিক সেজে প্রতারণার অভিযোগ উঠল নিউ ব্যারাকপুরে। এখন আগামী দিনে এই ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।