চিনের সঙ্গে এখনও ভারতের কয়েকটি বিষয়ে বিরোধ আছে। কিন্তু চিনকে জমি ছাড়েনি ভারত। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সমালোচনার জবাবে শুক্রবার একথা জানাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায়, ‘চিনের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য ভারতকে জমি ছাড়তে হয়নি। বরং চুক্তিতে বলা হয়েছে, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল মেনে চলতে হবে। একতরফা সীমারেখা পাল্টে দেওয়া যাবে না।’
এরপরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রতিরক্ষা রাজনাথ সিং ইতিমধ্যে যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে স্পষ্ট, চিনের সঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিরোধ নিয়ে কথা হয়েছে। হট স্প্রিং, গোগরা ও দেপসাং নিয়ে দু’পক্ষ মতবিনিময় করেছে। প্যাংগং সো এলাকা থেকে উভয় দেশ সেনা সরিয়ে আনার পরে ফের একদফা আলোচনা হবে।’
রাহুল গান্ধী এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশ্ন তোলেন, কীসের ভিত্তিতে ভারত সরকারের সঙ্গে চিনের চুক্তি হয়েছে? তাঁর অভিযোগ, চিনকে জমি ছেড়ে দিয়েছে ভারত। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংসদের দুই কক্ষে এলএসি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। তার পর জানা যাচ্ছে, ভারতীয় সেনাকে ফিঙ্গার থ্রি এলাকায় মোতায়েন করা হবে।
রাহুলের কথায়, “ফিঙ্গার ফোর অঞ্চল ভারতের অন্তর্গত। সেখানেই আমাদের সেনা শিবির ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী সেখান থেকে সরে আসছে ফিঙ্গার থ্রি এলাকায়।” প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি প্রশ্ন তোলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চিনকে জমি ছেড়ে দিচ্ছেন কেন? প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।”
রাহুলের সাংবাদিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই বিবৃতি দেয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক। তাতে বলা হয়, অনেকের ধারণা, ফিঙ্গার ফোর অবধি ভারতের সীমানা। এই ধারণা ভুল। মানচিত্রে ভারতের সীমানা নির্দিষ্ট করে দেখানো আছে। ১৯৬২ সাল থেকে ভারতের ৪৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি দখলে রেখেছে চিন। সেই অঞ্চলটিও মানচিত্রে দেখানো হয়েছে।
পরে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত মনে করে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল ফিঙ্গার এইটের কাছ দিয়ে গিয়েছে। সেজন্য চিনকে বরাবর ভারত বলে এসেছে, আমাদের সেনা ফিঙ্গার এইট অবধি টহল দেবে।’
ভারতের সীমানা সম্পর্কে আরও নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘প্যাংগং সো হ্রদের উত্তর তীরে দুই দেশের সেনা শিবির আছে। ভারতের শিবির আছে ফিঙ্গার থ্রি অঞ্চলে। তার নাম ধন সিং থাপা পোস্ট। চিনের শিবির আছে ফিঙ্গার এইটের পূর্বে। ভারতের সঙ্গে চিনের সাম্প্রতিক চুক্তিতে বলা হয়েছে, কেউ অপরের এলাকায় ঢুকবে না।’