এক একটি প্রাচীন দুর্গাপুজো। তারই মধ্যে অন্যতম জানবাজারের রানি রাসমণির বাড়ির পুজো। এই বাড়িতে পূজিতা হন একচালা শোলার সাজের মহিষাসুরমর্দিনী।
এই বাড়ির পুজোর অন্যতম বিষয় হল এই মূর্তি কোনও ছাঁচে তৈরি হয় না, শিল্পী নিজের দক্ষতায় তৈরি করেন মায়ের মূর্তি। বাড়ির সামনের বারান্দায় নাটমন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজো। স্বামীর মৃত্যুর পর রানি রাসমণি নিজের কাঁধে তুলে নেন এই পুজোর দায়িত্ব। তখন থেকেই এ বাড়ির পুজো জনপ্রিয়তা পায়। ১৮৬১ সালে রানি রাসমণির মৃত্যুর পর প্রাচীন ঐতিহ্যের স্পর্শ বহনকারী এই পুজো তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়। তবে শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোতে এতটুকুও ভাটা পড়েনি আভিজাত্য ও সাকেবিয়ানায়। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় সে যুগে সামিল হতেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। প্রতিপদ থেকে ঘরে পুজো শুরু হয়। ষষ্ঠীর দিন হয় বোধন এবং বেলবরণ। ওইদিনই দেবীর হাতে অস্ত্র দিয়ে গয়না পরানো হয়। সপ্তমীর দিন বাড়ির সব দেবতা গোপাল, লক্ষ্মী-জনার্দনকে নিচে ঠাকুর দালানে নামিয়ে নিয়ে আসা হয়। বাড়ির মেয়েরা রানি রাসমণির আমল থেকেই অন্দরমহলের একটি বিশেষ সিঁড়ি দিয়ে যাতায়াত করেন এই ক’দিন। পুজোর চারদিন মূল দরজা দিয়ে ঠাকুর দালানে আসা নিষেধ তাঁদের। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী এই তিনদিনই কুমারী পুজো হয়। তবে আকর্ষণীয় বিষয় হল, এ বাড়িতে ভোগে দেবীকে লুচি ও পাঁচরকম ভাজা অর্পণ করা হয়। তবে সবই নুন ছাড়া।