রোহিঙ্গারা ফিরে না গেলে কঠোর হবে বাংলাদেশ সরকার

আপাতত স্থগিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজের দেশ মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক উদ্যোগে এই প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও বাংলাদেশ থেকে তারা ফিরে যেতে চায়নি। ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন কড়া বার্তা দিয়ে জানালেন, “রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এক সময় কঠোর হবে। এখন তো তারা খুব সুখে আছে। কিন্তু সুখে খুব বেশিদিন থাকবে না। এরই মধ্যে টাকা-পয়সা কমছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে যারা কাজ করছে তারাও কঠোর হবে।”

বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পরেই আন্তর্জাতিক মহল সরগরম। প্রশ্ন উঠছে, এবার কি জবরদস্তি করে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে মায়ানমারে পাঠাবে বাংলাদেশ সরকার ? বিদেশমন্ত্রীর অভিযোগ, রোহিঙ্গারা যাতে ফেরত না যায়, তার জন্য ‘একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে’।

জাতিগত সংঘর্ষের কারণে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পালিয়ে এসেছে ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা। তাদের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির চালাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। ২০১৭ সাল থেকে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদের চাপ নিতে বাংলাদেশ যে আর বেশিদিন পারবে না তাও বার্তা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।

বিবিসি-কে তিনি জানান,নিজেদের তাগিদেই দেশে ফিরে যাওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের। তারা যদি ফেরত যেতে না পারে তাহলে তাদের নিজেদের সাথে সাথে তাদের সন্তানদেরও ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ানোর দায়িত্ব নিতে পারবে না বাংলাদেশ। কারণ তাদের ভাষার কোন শিক্ষক নেই এখানে। আস্তে আস্তে তাদের পুরো প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।

রোহিঙ্গাদের ফেরানো নিয়ে মায়ানমার ও বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রক্রিয়া চলেছে দীর্ঘ সময় ধরে। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রসংঘেও বিষয়টি তীব্র আলোড়ন তৈরি করে।রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান চালানোর সময় গণহত্যা ও গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে সমালোচিত হয় মায়ানমার সরকার। টালবাহানা কাটিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ৩, হাজারের বেশি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু নিজেদের জীবন ও মায়ানমারের নাগরিকত্বের দাবিতে অনড় রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে চাননি।

বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সময় হাজির ছিলেন চিন ও মায়ানমারের প্রতিনিধিরা। রোহিঙ্গারা ফিরতে না চাইলেও আমাদের প্রচেষ্টা চলবে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ১৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.