ভারতে কোভিডের টিকাকরণ শুরু হবে ১৬ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে নানা মহল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, বিধায়ক, সাংসদ ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের প্রথম দফায় টিকা দেওয়া হোক। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, নিয়ম ভেঙে প্রথমে রাজনীতিকদের টিকা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এদিন দেশে কোভিড পরিস্থিতি ও টিকাকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, প্রথম দফায় ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে আছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখ সারির কোভিড যোদ্ধারা। তাঁদের সংখ্যা তিন কোটি। এছাড়া যে ২৭ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের মধ্যে আছেন পঞ্চাশোর্ধ্বরা। পঞ্চাশের নীচে যাদের বয়স অথচ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁরাও প্রথম দফায় ভ্যাকসিন পাবেন।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর অনুরোধ করেন, এমপি এবং এমএলএ-দেরও প্রথম দফায় টিকা দেওয়া হোক। তখন মোদী কোনও জবাব দেননি। পরে হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে চিঠি লিখে একই অনুরোধ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকও কোনও জবাব দেয়নি।
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের সঙ্গে বৈঠকে বিহার ও ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেন, পঞ্চায়েত থেকে সংসদ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে যাঁরা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাঁদেরও প্রথম দফায় টিকা দেওয়া হোক। কারণ তাঁরাও সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসাবে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তখন হর্ষবর্ধন বলেছিলেন, প্রথম দফায় সকলকে টিকা দেওয়া সম্ভব নয়। অত ভ্যাকসিন এখন সরকারের হাতে নেই। এরপর এদিন মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, প্রথম দফায় রাজনীতিকদের টিকা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কিছুদিন আগেই জানা যায়, আমেরিকায় বেআইনিভাবে কোভিড ভ্যাকসিন বিক্রি হচ্ছে। নিউ ইয়র্কের পুলিশ জানতে পেরেছে, অন্তত একটি ক্ষেত্রে বেআইনিভাবে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে তা বিক্রি করা হচ্ছিল। ভারতে যাতে তা না হয়, সেজন্য সতর্ক হয়েছেন মোদী।
মোদী এদিন বলেন, “ভারতের ভ্যাকসিনই হবে সবচেয়ে সস্তা। টিকাকরণ নিয়ে আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। কোভিডের ভ্যাকসিন দিতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। আমরা সব নিয়ম মেনেই টিকা দেব।”
ভারতে করোনা সংক্রমণ ইতিমধ্যে কমে এসেছে। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৬ হাজার ৩১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে ১১ জানুয়ারি, সকাল ৮টা পর্যন্ত ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৫ জন।
বুলেটিন জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৫১ হাজার ১৬০ জন। ভারতে করোনায় মৃত্যুহার ১.৪৪ শতাংশ।