প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে আত্মনির্ভরতা বাড়াচ্ছে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হাত ধরে সেই স্বনির্ভরতা মিশন শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র আমদানির বদলে দেশে তৈরি অস্ত্রের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়কে হাতিয়ার করেই সুর চড়ালেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত।
বৃহস্পতিবার তিনি জানান, দেশে অস্ত্র তৈরির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদন করা হবে অস্ত্রের সরঞ্জামেরও। ফলে এবার ভারত সমরসজ্জা করবে দেশের মাটিতে তৈরি অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে। মেড ইন ইন্ডিয়া ও মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে তৈরি অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ জেতার মতো সন্তুষ্টি আর কিছুতে মেলে না। দেশের তৈরি জিনিস দিয়ে দেশকে রক্ষা করার আনন্দই আলাদা।
বিপিন রাওয়াত এদিন বলেন অত্যাধুনিক অস্ত্র ও তার সরঞ্জাম তৈরির ক্ষমতা ভারতের রয়েছে। ভারত এই মুহুর্তে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বেশ কিছু হুমকি পাচ্ছে। একদিকে যেমন করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছে ভারত, তেমনই সীমান্তে লড়ছে বহিরাগতদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে। সেই যুদ্ধে ভারতের জওয়ানদের হাতে যদি দেশের তৈরি অস্ত্র থাকে, তবে মানসিক শক্তি অনেক বেশি বেড়ে যায়।
রাওয়াতের মতে ভারত এখন গ্লোবাল পাওয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। এটাই সঠিক সময় দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর। উল্লেখ্য অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারত রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। অস্ত্র রফতানিতে ২৩ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদী আগামী পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষা রফতানিতে ৫বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন। তাঁর আশা ভারত আগামী পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করতে সক্ষম হবে।
সেদিকে নজর দিয়ে প্রাক্তন সেনাপ্রধান বলেন আত্মনির্ভর ভারতের সেই ক্ষমতা রয়েছে। দেশের সম্পদকে ব্যবহার করতে হবে সঠিক পথে। তবেই প্রধানমন্ত্রীর শ্লোগানের মর্যাদা রাখা সম্ভব। বিপিন রাওয়াতের সুরেই কথা বলেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনিও বারবার আত্মনির্ভর ভারতের আওয়াজ তুলেছেন। প্রতিরক্ষা খাতে এই স্বনির্ভরতা দেশকে অন্য মাত্রায় উন্নতি দেবে বলে আশ্বাসও এসেছে তাঁর কাছ থেকে।
খুব দ্রুত আমদানি করা পণ্যের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশকে আত্মনির্ভরতার পথে আরও একধাপ এগিয়ে দিতে চলেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জানা গিয়েছে কিছু দিনের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এমন অস্ত্র ও অস্ত্রের সরঞ্জামের দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
দেশীয় কোম্পানিগুলিকে আরও উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়া ও দেশকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত বলে খবর। এই বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। দেশীয় কোম্পানিগুলি কি কি সরঞ্জাম তৈরি করতে প্রস্তুত, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে এই তালিকা তৈরি করা হবে।