যে বাড়িতে বসে পুলওয়ামা হামলার ছক কষা হয়, গ্রেফতার সেই বাড়ির মালিক তারিক আহমেদ শাহ ও তার মেয়ে

এনআইএ মঙ্গলবার গত বছর দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার লেথপোরায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক পিতা-কন্যাকে গ্রেফতার করেছে। এনআইএ গ্রেফতার হওয়া পিতা-কন্যাকে জম্মুর এনআইএ আদালতে হাজির করে। সেখান থেকে তাদের দুজনকে দশ দিনের রিমান্ডে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে শরিক মাগারে পুলওয়ামা হামলায় জড়িত হিসেবে এনআইএর হাতে ধরা পড়ে। এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলওয়ামা হামলার তদন্তভার এখন এনআইএর হাতে। ১৪ফেব্রুয়ারী ২০১৯ এ হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ সদস্য শহীদ হন। মঙ্গলবার সকালে পুলওয়ামা জেলার হকারিপাড়া গ্রামে এনআইএ দল অভিযান চালায়। এসময় তাদের সঙ্গে পুলিশ ও সিআরপিএফও ছিল। দলটি তারিক আহমেদ শাহের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়। তারা তারিক আহমেদ শাহ (৫০) ও তাঁর মেয়ে ইনশা তারিককে (২৩) তাদের সঙ্গে থানায় নিয়ে যায় ।

সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে এনআইএর কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারিক হ’ল টিআইপি চালক, এনআইএ জানিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারিক প্রকাশ করেছেন যে পুলওয়ামার লেথপোরায় সিআরপিএফের কনভয়ের উপর
আত্মঘাতী হামলার পূর্ববর্তী প্ল্যান বাস্তবে পরিণত করার জন্য আদিল আহমেদ দার, পাকিস্তানী সন্ত্রাসবাদী এবং আইইডির বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ওমর ফারুক, পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী কামরান, সন্ত্রাসী জৈশ আতঙ্কবাদী সমীর আহমেদ দার এবং আরেক পাকিস্তানি সন্ত্রাসী মোহাম্মদ ইসমাইল ওরফে ইব্রাহিম ওরফে আদনান তার বাড়িটি ব্যবহার করে। উল্লেখ্য হামলার পরে ওমর ও কামরান সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিকেশ হয়।

জিজ্ঞাসাবাদকালে আরও জানা গেছে যে তারিক তার বাড়িতে এই সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল। এই আত্মঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র তারা সেখানে বসেই করে। শুধু তাই নয়, আত্মঘাতী হামলাকারী আদিলের ভিডিওও তারিকের বাড়িতে রেকর্ড করা হয়ে যা হামলার পরপরই জৈশ ই মোহাম্মদের তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়। ইনশাও পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীর সংস্পর্শে ছিল। ওই কর্মকর্তার মতে, তারিকের মেয়ে ইনশা ঘরে বসে এই সমস্ত সন্ত্রাসীর খাবার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করত । এই সন্ত্রাসবাদীরা হামলার আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে তাদের বাড়িতে প্রায় ১৫ বার যাতায়াত করেছে। প্রতিবার দু-চার দিন করে তারা সেখানে থাকত ।

এনআইএ তদন্তে আরও প্রকাশিত হয়েছে যে ইনশা পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী এবং আইইডি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সঙ্গে টেলিফোনে এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলির অ্যাপসের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত মোট তিন আসামিকে এনআইএ গ্রেপ্তার করেছে। প্রথম শরিক মাগারেকে গত সপ্তাহে এনআইএ গ্রেফতার করে। এনআইএ সূত্র জানায়, তদন্তে আরও জানা গেছে যে আদিল যেদিন আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল সেদিন সে গাড়ি চালাচ্ছিল এবং ঘটনাস্থলের প্রায় ৫০০ মিটার আগে অবতরণ করেছিল। সূত্রমতে, মাগারেই সিআরপিএফের এই কনভয়টি চিহ্নিত করে । মাগারের হাজিবল পুলওয়ামায় ফার্নিচারের দোকান রয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.