তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই শিশুদের টিকাকরণ শুরু করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের কয়েকটি রাজ্যে এখনও কোভিড ভ্যাকসিনের আকাল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য টিকা কবে আসবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছে, আর বেশি দেরি করা হবে না। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রথম দফায় শিশুদের জন্য করোনার ভ্যাকসিন চলে আসবে।
আইসিএমআর ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-এর ডিরেক্টর প্রিয়া আব্রাহাম জানিয়েছেন, বাচ্চাদের শরীরে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল কতদূর এগোল তার প্রতি পর্যায়ের খবর রাখা হচ্ছে। তাছাড়া ভারত বায়োটেক নতুন একরকম ভ্যাকসিন তৈরি করেছে (ভিরিয়ন-ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন) তৈরি করেছে যেটির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। এই ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ হলেও আশার আলো দেখা যাবে।
বাচ্চাদের জন্য আপাতত দুটি ভ্যাকসিনই ছাড়পত্র পাবে বলে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। ভারত বায়োটেকের টিকার ট্রায়াল চলছে শিশুদের ওপরে, পাশাপাশি জাইদাস ক্যাডিলার জাইকভ ডি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগও শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও জাইদাস ক্যাডিলাকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতাতেও শুরু হয়েছে ট্রায়াল। পাশাপাশি, ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের ওপর কোভ্যাক্সিন টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে। তিন ক্যাটেগরিতে ভাগ করে ট্রায়াল করা হচ্ছে। প্রথমটা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী, দ্বিতীয় ধাপে ৬ থেকে ১২ বছর ও তৃতীয় ধাপে ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের ওপরে টিকার ট্রায়াল হবে।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি ছড়াতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করা হচ্ছে। তাই খুব তাড়াতাড়ি শিশুদের টিকার ডোজ দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় প্যানেল। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যেখানে টিকার জোগানে টান পড়ছে, সেখানে শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত ডোজ পাওয়া যাবে কিনা সে নিয়ে সংশয়ও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে এমন একটি সময়ে যখন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনুসখ মাণ্ডবিয়া সংসদে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এ বছরের শেষের মধ্যে সব প্রাপ্তবয়স্ককে প্রতিষেধক দেওয়া যাবে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। যদিও স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ভারত বায়োটেক বা জাইদাস ক্যাডিলার মতো ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা দু’ধরনের টিকার জন্যই পর্যাপ্ত ডোজ বানাচ্ছে। তারা ইতিমধ্যেই ছোটদের ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কত টিকা বানানো হবে, সেই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে নিয়েছে। ফলে দু’টির মধ্যে সংঘাতের কোনও প্রশ্নই নেই।