পাকিস্তানের মাটিতে ফের বড়সড় আক্রমণ চালাতে পারে ভারত। ২০১৬ সালের সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকেরই কি পুনরাবৃত্তি হবে? ভয়ে, আতঙ্কে ঘুম উড়েছে পাকিস্তানের। শোনা গেছে, গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইও নাকি এমন আশঙ্কা করেছে। বৈঠক, আলোচনা চলছে দফায় দফায়। সেনাবাহিনীকে বিশেষভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে আরও বেশি সেনা নামাচ্ছে পাকিস্তান।
ব্যাপারটা আসলে কী? পাক গুপ্তচর সংস্থা নাকি থবর দিয়েছে কৃষক আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতেই পাকিস্তানকে নিশানা করতে পারে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভারতে কৃষক বিদ্রোহ চরম আকার নিয়েছে। চাপ বেড়েছে সরকারের। তাই সেদিক থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই পাকিস্তানের মাটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারে ভারতীয় সেনারা। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে আক্রমণের সম্ভাবনাও রয়েছে। এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য নাকি আগামীকাল জরুরি বৈঠকও করবেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈয়াজ হামিদ।
পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ খবর রটে গেছে। এমনও বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে কোনও কারণ ছাড়াই পাকিস্তানের মাটিতে আক্রমণ চালিয়েছিল ভারত। ফের তার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। পাকিস্তানের এক নামজাদা সাংবাদিক সলমন মাসুদও গতকাল টুইট করে এমন কথাই জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, পাকিস্তানে সন্ত্রাস করার ছক কষছে ভারত। তেহরিক-ই-তালিবান গোষ্ঠীর সঙ্গে নাকি গোপন আঁতাত রয়েছে ভারতের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের উস্কে দেওয়া হচ্ছে। সলমনের আরও দাবি, শিখ কৃষকদের দাবিয়ে রেখে খালিস্তানি আন্দোলন বন্ধ করার পরিকল্পনাও আছে ভারতের। যখন তখন ভারতীয় বাহিনী হামলা চালাতে পারে। পাক সেনাদের সতর্ক করা হয়েছে।
পাকিস্তানের এই দাবি একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। তবে আতঙ্কের কারণ অবশ্য রয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্তে বারে বারেই সংঘর্ষবিরতি ভেঙে চলেছে পাক সেনারা। জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেষবার সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনার গুলিতে চার ভারতীয় জওয়ান শহিদ হওয়ার পরেই সেনাবাহিনীর রুদ্র মূর্তি দেখেছিল পাকিস্তান। একের পর এক যুদ্ধট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মিসাইলের ধাক্কায় গুঁড়িয়ে গিয়েছিল পাক বাহিনীর লঞ্চপ্যাড। পাক সেনার ঘাঁটি লক্ষ্য করে লাগাতার রকেট হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর তরফেই একাধিক ভিডিও সামনে এসেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক ঘাঁটিতে আগুন জ্বলছে। ধোঁয়ায় ভরে গেছে সীমান্ত। একের পর এক মিসাইল ছুড়েছে ভারত। গুঁড়িয়ে দিয়েছে পাক সেনার বাঙ্কার। এসব দেখেই কার্যত ভয় পেয়ে গিয়েছে পাক বাহিনী। ভারতীয় জওয়ানদের ক্ষমতা কতটা হতে পারে সেটা সেদিনই মালুম পেয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান।
জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্তে আরও কঠোর ভারতীয় বাহিনী, সে কথাও অজানা নয় পাকিস্তানের। জঙ্গি অনুপ্রবেশ রোখার জন্য সীমান্তে বিশেষ স্ট্র্যাটেজি নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা আরও মজবুত করতে নতুন করে সেনা পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ৩৪৩.৯ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে সেনার সংখ্যা প্রায় তিনগুণ করা হয়েছে। ভারতীয় বাহিনীর তিনটি ব্যাটেলিয়ন দিবারাত্র সীমান্তে নজর রেখে বসে আছে। একদিকে পূর্ব লাদাখে সেনা বাড়িয়েছে ভারত, অন্যদিকে পাক সীমান্তে নজরদারি আরও বেড়েছে। এ সব কিছুই এখন পাকিস্তানের মাথাব্যথার কারণ।