বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চাল রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। চিনও চাল আমদানি করে ভিয়েতনাম থেকে। সেই ভিয়েতনামই কিনা চাল কিনছে ভারতের থেকে! এতদিন জানা গিয়েছিল বিশ্বের বাজারে চাল রফতানি নিয়ে জোরদার টক্কর আছে দুই দেশের। বলা যায়, চাল রফতানিতে ভারতের অন্যতম প্রতিযোগী এই ভিয়েতনাম। একুশ সালে এসে তারাই বিপুল পরিমাণ চাল কেনার বরাত দিয়েছে দেশের কয়েকটি ব্যবসায়ী সংস্থাকে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৭০ হাজার টন চাল কেনার জন্য ভারতের কয়েকটি ব্যবসায়ী সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। চলতি মাস থেকেই চাল রফতানি শুরু হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কয়েকটি দফায় জাহাজে চাপিয়ে চাল পৌঁছে দেওয়া হবে ভিয়েতনামে। ভারতীয় চাল রফতানিকারকদের সংগঠন ‘রাইস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে টন প্রতি ৩০০ ডলার (ভারতীয় টাকায় প্রায় ২২,৬৬৬ টাকা)দরে ভারত থেকে চাল আমদানি করছে ভিয়েতনাম।
‘রাইস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রেসিডেন্ট বি ভি কৃষ্ণা রাও জানিয়েছেন, কয়েক দশকে এই প্রথমবার ভারত থেকে চাল কিনছে ভিয়েতনাম। এর কারণ হল, গত ৯ বছরে ভিয়েতনামের স্থানীয় বাজারে চালের দাম চড়চড় করে বেড়েছে। করোনা মহামারীর সময় চালের দাম আরও লাগামছাড়া। তাই সস্তায় ভারত থেকে চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সরকার।
ভিয়েতনামের বাজারে টন প্রতি চালের দাম ভারতীয় টাকায় ৩৬ হাজার টাকারও বেশি। ভারতে সেখানে টন প্রতি রফতানিকারক চালের দাম ২২ হাজার টাকার মধ্যেই রয়েছে। ভায়েতনাম সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সেই ২০১৬-১৭ সাল থেকে ভারতে রফতানিকারক চালের দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশে চালের দাম বেড়েছে, বিশেষত করোনা কালে দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রফতানিযোগ্য চালের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে।
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের বৃহত্তম চাল রফতানিকারক দেশ। প্রায় তিন-চার দশক পরে চিনকেও কয়েক লক্ষ টান চাল রফতানি করেছে। ভিয়েতনাম জানিয়েছে, তাইল্যান্ড, মায়ানমার, পাকিস্তানের থেকেও কম দামে উন্নত মানের চাল পাওয়া যায় ভারতে। গত বছর চালের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোগানও কমেছে ভিয়েতনামে। রফতানিযোগ্য চালের পরিমাণ ৩.৫ শতাংশ কমে গেছে। তাই এশিয়া ও আফ্রিকার বাজারে ভারতের চালের চাহিদা বেড়েছে। ওলাম ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট নিতীন গুপ্ত বলেছেন, যতদিন বিশ্বের বাজারে চালের দাম কম থাকবে ভারতের চালের চাহিদা এমনই থাকবে। ভিয়েতনাম আরও বেশি চাল কেনার বরাত দিতে পারে ভারতকে।