সীমান্তের দিকে তাকালেই যোগ্য জবাব দেওয়া হবে, একতা দিবসে হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর

 লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৪৫ তম জন্মদিবসে ‘জাতীয় একতা দিবসে’ দেশের সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ফের একবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সীমান্তের দিকে তাকালে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে, এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ফের একবার পুলওয়ামার শহিদদের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, একতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে ফের একবার পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার কথা মনে পড়ছে তাঁর। দেশের জন্য শহিদ হয়েছিলেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। কিন্তু অনেকে সেই বলিদান ভুলে গিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করেছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন তিনি।

একতা দিবসের কুচকাওয়াজ শেষে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের সীমান্ত নিয়ে চিন্তাভাবনা বদলেছে। নিজেদের সীমান্ত রক্ষায় এখন আমরা অনেক বেশি তৎপর। এখন যদি কেউ (পড়ুন পাকিস্তান ও চিন) সীমান্তের দিকে তাকায় তাহলে তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”

সেইসঙ্গে পুলওয়ামার জঙ্গিহানার প্রসঙ্গও টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আজ যখন আমি এই কুচকাওয়াজ দেখছিলাম তখন আমার মাথায় পুলওয়ামা হামলার ছবি ভেসে আসছিল। দেশ কখনওই ভুলতে পারবে না ৪০ জওয়ানের বলিদান। কিন্তু কেউ কেউ সেই দুঃখের অংশীদার ছিলেন না। তাঁরা এই হামলা থেকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করার চেষ্টা করেছিলেন।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এখন যখন পড়শি দেশের সংসদে এই হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে তখন এই লোকগুলোর (পড়ুন বিরোধী দলের নেতাদের) আসল চেহারা দেশের মানুষের সামনে প্রকাশ হয়ে গিয়েছে।”

চলতি বছর ১৪ ফেরুয়ারি পুলওয়ামা হামলার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেন, কেন্দ্র এই সুরক্ষার গাফিলতির জন্য দায়ী। এই হামলা থেকে কার সবথেকে বেশি লাভ হয়েছে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এমনকি এই হামলার পরে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার কী ফল বেরিয়েছে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

গত বছর পুলওয়ামা হামলার পরেই বালাকোটে হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ ই মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর একাধিক শিবির উড়িয়ে দেওয়া হয় বলেই জানানো হয় সেনার তরফে। পরবর্তীকালে উনিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বারবার এই বালাকোট হামলার প্রসঙ্গ টেনে আনে বিজেপি। সেই কারণেই বিজেপিকে কটাক্ষ করেন রাহুল।

যদিও বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সংসদে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেন, পুলওয়ামায় ভারতের ভিতরে ঢুকে হামলা চালানো ইমরান খান সরকারের সাফল্য। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখা করা হয়েছে বলে দাবি করেন ফাওয়াদ। তিনি বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না।

পরের দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর দাবি করেন, কংগ্রেসের উচিত এই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া। যদিও শনিবার কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা শুধুমাত্র প্রশ্ন করেছেন। তাই ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এই বিষয়েই ফের একবার বিরোধীদের কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সীমান্ত নিয়ে নাম না করে পাকিস্তান ও চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.