কাশ্মীরে জেলা উন্নয়নের পর্ষদের ভোটের আগে বড়সড় নাশকতার চেষ্টায় ছিল জঙ্গিরা। সে ছক বানচাল করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। সঠিক সময় খবর দিয়ে হামলার চেষ্টা রুখে দিয়েছেন গোয়েন্দা অফিসাররাও। উপত্যকায় জঙ্গি নিধন অভিযানের সাফল্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
টুইট করে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ফের তাদের সাহসিকতা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। সঠিক সময় সতর্ক করার জন্য তাদের ধন্যবাদ। জম্মু-কাশ্মীরে গণতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষায় এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ছক ভেস্তে দেওয়া গেছে।”
জম্মুতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে খতম হয়েছে চার জইশ জঙ্গি। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। গোয়েন্দা অফিসাররা বলছেন, ২৬/১১ মুম্বই হামলার মতোই কোনও ভয়ানক নাশকতার ছক ছিল জঙ্গিদের। পাকিস্তানের মদতেই সীমান্তের এপারে পাঠানো হয়েছিল সন্ত্রাসবাদীদের। বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কোনও গোপন ঘাঁটিতে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল তারা। সে খবর আগেই দিয়ে দেয় গোয়েন্দারা। জঙ্গিভর্তি একটি ট্রাক নাগরোটার বান টোল প্লাজার কাছে আসছে এমন খবর পেয়েই সতর্ক হয়ে গিয়েছিল জম্মু পুলিশ।
Neutralising of 4 terrorists belonging to Pakistan-based terrorist organisation Jaish-e-Mohammed and the presence of large cache of weapons and explosives with them indicates that their efforts to wreak major havoc and destruction have once again been thwarted.
— Narendra Modi (@narendramodi) November 20, 2020
নাগরোটা টোল প্লাজার কাছে চেকিং আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই দেখেই ভয় পেয়ে পুলিশের ভ্যান লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। ট্রাকের ভেতরে গা ঢাকা দিয়ে গুলি চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। গুলিতে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। জঙ্গিদের রুখতে পরে আসরে নামে সেনাবাহিনী। তিন ঘণ্টা গুলির লড়াইয়ে নিকেশ হয় চার জঙ্গি।
আইজিপি (জম্মু) মুকেশ সিং বলেছেন, নাগরোটার বান টোল প্লাজার কাছে একটি ট্রাকে গা ঢাকা দিয়ে পালাবার চেষ্টায় ছিল জঙ্গিরা। মনে করা হচ্ছে উপত্যকায় বড়সড় নাশকতা বাঁধানোর লক্ষ্য ছিল তাদের। বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ছিল তাদের কাছে। ট্রাক থেকে ১১টি একে-৪৭ রাইফেল, তিনটি পিস্তল, ২৯টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ে আপাতত বন্ধ। নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে নাগরোটা এলাকা।
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরেই অন্তত ২০০ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ভারতীয় বাহিনী। যাদের মধ্যে দু’জন প্রতাপশালী হিজবুল কম্যান্ডার। নিয়ন্ত্রণরেখায় লাগাতার পাক সেনার সংঘর্ষবিরতির মাঝেই একের পর এক জঙ্গি নিধন অভিযানে সাফল্য এসেছে ভারতীয় সেনার। গত মাসেই পুলওয়ামায় সেনার গুলিতে খতম হয়েছে হিজবুলের অপারেশনাল কম্যান্ডার সইফ উল ইসলাম ওরফে ডক্টর সৈফুল্লাহ। কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠীর সক্রিয় কম্যান্ডার ছিল সৈফুল্লাহ। রিয়াজ নাইকুর হত্যার পরে হিজবুলের নেটওয়ার্ক ছিল তারই হাতে। এই কম্যান্ডারের মৃত্যু নিঃসন্দেহে জঙ্গি গোষ্ঠীতে একটা বড় ধাক্কা। জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ বলেছেন, রিয়াজ নাইকু খতম হওয়ার পরে কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠী শুধু নয় অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের অন্তত ২০০ জনকে খতম করা সম্ভব হয়েছে।