ভারতে টিকাকরণ ঢিমে তালে হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছিল নানা মহলেই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব বলছে, দেশে সোমবার অবধি ৩২ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ টিকার একটি বা দুটি ডোজ পেয়ে গেছেন। জুলাই মাসের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ তো হবেই, আরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। আমেরিকায় আজ অবধি ৩৩ কোটি মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। কাজেই ভারত যে আর কিছুদিন বাদে আমেরিকাকেও ছাপিয়ে যাবে সেটা বলাই বাহুল্য।
ভারতের কোভিডের টিকাকরণ দুরন্ত গতিতে এগোচ্ছে। বাহবা জানিয়ে টুইট করেছেন বিজেপি-র আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলছে, দেশে টিকাকরণ দ্রুত গতিতে হচ্ছে। তাই সংক্রমণের হারও নিম্নমুখী। কোভিড কমছে ধীরে ধীরে। তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে ঠিকই, তবে কোভিড কার্ড বিপজ্জনক সীমা পার হয়নি এখনও। দেশে দৈনিক আক্রান্ত ৫০ হাজারের নীচেই আছে। আজকের হিসেবে ৪৬ হাজারের কাছাকাছি। সংক্রমণের দৈনিক মৃত্যু হাজারের নীচে। কোভিড অ্যাকটিভ কেসের হার পাঁচ শতাংশের ওপরে উঠে গিয়েছিল, এখন ফের দুই শতাংশের নীচে নেমে গেছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই শিশুদের টিকাকরণ শুরু করার জোরদার প্রস্তুতি চলছে। পাটনা এইমসে ইতিমধ্যেই দুই বছর বয়সের ওপরে শিশুদের টিকার ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। ২৮ মে থেকে শিশু ও কমবয়সীদের শরীরে দেশের তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। তিন ক্যাটেগরিতে ভাগ করে ট্রায়াল করা হবে। প্রথমটা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী, দ্বিতীয় ধাপে ৬ থেকে ১২ বছর ও তৃতীয় ধাপে ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের ওপরে টিকার ট্রায়াল হবে। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শিশুদের জন্য টিকা চলে আসতে পারে বাজারে।
অন্যদিকে, জাইদাস ক্যাডিলাও শিশুদের জন্য টিকা নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শরীরে জাইকভ ডি টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। পশ্চিমবঙ্গেও তা শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে জুলাই মাসের শেষ বা অগস্টের মধ্যেই শিশুদের জন্য কোভিড টিকা আনতে পারবে জাইদাস ক্যাডিলা। তাছাড়া অন্যান্য কোম্পানিগুলির মধ্যে বায়ো-ই, নোভাভ্যাক্স, সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভাভ্যাক্স, ভারত বায়োটেকের ন্যাজাল ভ্যাকসিন, জেনোভা এমআরএনএ-র ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে। তাছাড়া বায়ো-ই তে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার কথা চলছে। সেই ভ্যাকসিন অগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আসবে। মাসে পাঁচ কোটি করে ডোজ তৈরি হওয়ার পরিকল্পনা আছে।