লাদাখে বিশ্বের উচ্চতম রাস্তা বানাচ্ছে ভারত, এভারেস্টের বেস ক্যাম্পের চেয়েও বেশি উঁচু

বলিভিয়ার উচ্চতম রোডকেও হার মানাবে। এভারেস্টের দক্ষিণ ও উত্তর বেস ক্যাম্পের থেকেও বেশি উঁচু। লাদাখে বিশ্বের উচ্চতম রাস্তা বানাচ্ছে ভারত।

কেন্দ্রীয় সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, লাদাখে ১৯ হাজার ৩০০ ফুট উচ্চতায় রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতদিন বলিভিয়াতেই ১৮ হাজার ৯৫৩ ফুট উচ্চতায় বিশ্বের সর্বোচ্চতম রাস্তা ছিল। তাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে ভারত।


উমলিংলা পাসে তৈরি এই রাস্তা এভেরেস্টের বেস ক্যাম্পের চেয়েও বেশি উঁচু। নেপালে অবস্থিত এভারেস্টের সাউথ বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ১৭ হাজার ৫৯৮ ফুট, অন্যদিকে তিব্বতে অবস্থিত নর্থ বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ১৬ হাজার ৯০০ ফুট। লাদাখের রাস্তা এর চেয়েও বেশি উঁচুতে।

চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহেই বিশ্বের উচ্চতম রাস্তা নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাওয়াকে ভারতের কূটনৈতিক কৌশলগত দিক বলেই মনে করছেন অনেকে। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সুরাহা হয়নি। বরং অশান্তি জিইয়ে রেখেছে লাল ফৌজ। দফায় দফায় সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ে বৈঠক চলছে। তার মধ্যেই ভরতের বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন নতুন রাস্তা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বলিভিয়ার রেকর্ড ভেঙে বিশ্বের উচ্চতম রাস্তা তৈরির রেকর্ডে নাম উঠলে ভারত কূটনৈতিক দিক থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

এই রাস্তার গুরুত্ব হল, যে কোনও কর্মাশয়াল ফ্লাইট ৩০ হাজার উচ্চতা অবধি উড়তে পারবে। বিশ্বের অনেক জায়গাতে এমন উঁচু রাস্তা আছে তবে সেখানে যানবাহন চলাচলের সুবিধা নেই। কিন্তু লাদাখে তৈরি এই রাস্তায় সেই সুবিধা আছে।
সম্প্রতি চিন সীমান্তের কাছে দারবুক থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি পর্যন্ত একটি ফিডার রোড তৈরি করেছে ভারত। এর ফলে গালওয়ান উপত্যকায় যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে। ওই অঞ্চলে আরও কয়েকটি রাস্তা বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্ডার ম্যানেজমেন্ট দফতরের এক উচ্চপদস্থ অফিসার বলেন, ওই অঞ্চলে আরও ৩২ টি রাস্তা তৈরির কথা আছে। ২০১৯ সালের মধ্যেই রাস্তাগুলি তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে দেরি হয়েছে। দ্রুত রাস্তাগুলি তৈরি করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।


আগামী দিনে লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম ও উত্তরাখণ্ডে খুব দ্রুত দু’টি রাস্তা তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, সীমান্তে রাস্তা বানানোর জন্য যাতে আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব না হয়, সেজন্য তৎপর হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। দ্রুত রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম লাদাখে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে চিনুক হেলকপ্টার। গত ছ’বছরে সীমান্তে ৪৭৬৪ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছে ভারত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সীমান্তে প্রতি বছর ২৩০ কিলোমিটার করে রাস্তা তৈরি হত। কিন্তু তার পরে প্রতি বছরে ৪৭০ কিলোমিটার করে রাস্তা তৈরি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.