বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করে একের পর সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ করছে কেন্দ্রে মোদী সরকার। এর ফলে দেশের অর্থনীতি কিছু শিল্পপতির হাতে কুক্ষিগত হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। কিন্তু নীতি আয়োগের বৈঠকে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের বেসরকারি ক্ষেত্রের গুরুত্বর কথা তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথভাবে বেসরকারি ক্ষেত্রকে সুযোগ দেওয়া উচিত। তবেই আত্মনির্ভর ভারত গড়ে উঠবে।
শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার হিসেবে কেন্দ্র ও রাজ্যের উচিত বেসরকারি ক্ষেত্রকে আরও বেশি সুযোগ দেওয়া। আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে এটাই আমাদের পদক্ষেপ হওয়া উচিত।”
এই প্রসঙ্গে কোভিড সময়ের উদাহরণ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, “কোভিড সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কাজ করেছে। তার ফলে বিশ্বের সামনে ভারতের খুব ভাল ছবি তুলে ধরতে পেরেছি আমরা। কেন্দ্র ও রাজ্যের একযোগে কাজ করা ও একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলার উপরেই ভারতের উন্নয়ন নির্ভর করছে। এই পারস্পরিক বোঝাপড়া শুধুমাত্র রাজ্যগুলির মধ্যে থাকলে চলবে না, জেলাগুলির মধ্যেও থাকতে হবে।”
এদিনের বৈঠকে প্রায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গভর্নররা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ এই প্রথম এই বৈঠকে অংশ নিল।
উল্লেখযোগ্য ভাবে এদিনের বৈঠকে ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং। এর আগের বৈঠকেও থাকেননি মমতা। তিনি আগেই অভিযোগ করেছেন, এই বৈঠকের কোনও ফল নেই। কারণ নীতি আয়োগের কোনও আর্থিক ক্ষমতা নেই এবং তারা রাজ্যের কোনও প্রকল্পে সাহায্য করতে পারে না।
এদিনের বৈঠকে মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রত্যেক দেশবাসীর জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করার চেষ্টা করতে হবে। ভারতীয়দের স্বপ্ন পূরণ করলেই তাদের জীবন আরও উন্নত হবে।”
গত কয়েক বছরে দেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি, টিকাকরণ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও রান্নার গ্যাস প্রভৃতি পরিষেবায় গরিব মানুষের অনেক উপকার হয়েছে বলেই জানিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, “চলতি বছরের বাজেটকে দেশবাসী যেভাবে স্বাগত জানিয়েছেন তাতেই তাঁদের মানসিকতা বোঝা যাচ্ছে। দেশ মনস্থির করে নিয়েছে সময় নষ্ট না করে উন্নতি করতে চায় সবাই। এই কাজে দেশের তরুণ প্রজন্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।”
নীতি আয়োগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর বৈঠক করে তারা। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম বৈঠক হয়েছিল। যদিও গত বছর করোনা আবহে বন্ধ ছিল এই বৈঠক।