গত দেড় মাসে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করে গেছে ভারত। সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ব্রাহ্মসের ল্যান্ড ও ন্যাভাল দুই ভার্সনেরই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলেরও পরীক্ষায় পাশ করে গেছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও)। এবার ১০ কিলোমিটার পাল্লার শক্তিশালী স্ট্যান্ড-অব অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইলের পরীক্ষামূলক নিক্ষেপ করতে চলেছে ডিআরডিও।
স্ট্যান্ড-অব অ্যান্টি ট্যাঙ্ক এয়ার-টু-সারফেস মিসাইল যা বানিয়েছে ডিআরডিও। ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জে রুফ-টপ লঞ্চার থেকে ছোড়া হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। সঠিক নিশানায় গিয়ে আঘাত করেছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া যায় এমন ক্ষেপণাস্ত্র যেমন নাগ (হেলিনা) মিসাইলের আপগ্রেডেড ভার্সন হল স্ট্যান্ড-অব অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল। এর পাল্লা প্রাথমিকভাবে ১০ কিলোমিটার, তবে এর রেঞ্জ বাড়িয়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার করা যায়।
আবহাওয়ার যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ছোড়া যায় এই মিসাইল। রাশিয়ার তৈরি এম-৩৫ হেলিকপ্টার থেকে নিক্ষেপ করা যাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। লাদাখ সংঘাতের আবহে ভারতীয় বাহিনীর বড় অস্ত্র হতে পারে এই মিসাইল। প্রায় ২০ কিলোমিটার পাল্লায় ছুটে গিয়ে শত্রুপক্ষের যুদ্ধট্যাঙ্ক ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারে।
ওড়িশার চাঁদিপুরের টেস্ট রেঞ্জ থেকে রাতের অন্ধকার পৃথ্বী ২ মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। সারফেস-টু-সারফেস শর্ট-রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল পৃথ্বী ২ বহু দূর থেকেই শত্রুঘাঁটি চিনে নিতে পারে এই মিসাইল। একবার নিক্ষেপের পরে নির্ভুল নিশানায় আঘাত করতে পারে। এতে রয়েছে ‘ইনার্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম’। দিনে ও রাতে, আবহাওয়ার যে কোনও পরিস্থিতিতে শত্রুঘাঁটিতে পরমাণু হামলা চালাতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। তার আগে অ্যান্টি-রেডিয়েশন মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণেও সাফল্য এসেছে। সুখোই-৩০ ফাইটার জেট থেকে নির্ভুল নিশানায় ছুটে গেছে দেশের তৈরি আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র রুদ্রম। লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের আবহে দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় বাহিনীর বড় হাতিয়ার হতে চলেছে বলেই জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
সুপারসনিক মিসাইল অ্যাসিস্টেড রিলিজ টর্পেডো বা ‘স্মার্ট’(SMART) ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষায় সাফল্য মিলেছে। বিশেষত ভারত মসাহাগরে যেভাবে চিনের আধিপত্য বাড়ছে তাতে সমুদ্র-যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে বা শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ গোপনে হামলা চালাবার চেষ্টা করলে, সর্বশক্তি দিয়ে তা রুখে দিতে পারবে ‘স্মার্ট’ ক্ষেপণাস্ত্র। ব্রাহ্মস মিসাইল ছুড়ে শক্তির প্রদর্শন করেছে ভারত। অর্জুন যুদ্ধট্যাঙ্ক থেকে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও সফল। শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী সুপারসনিক শৌর্য ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক নিক্ষেপেও সাফল্য পেয়েছে ডিআরডিও। ৭০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু অস্ত্র বহু করতে পারে। শৌর্য সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক-০৫ মিসাইলের ল্যান্ড ভার্সন। অর্থাৎ ভূমি থেকে ভূমিতে ছোড়া যায় এই মিসাইল। ডিআরডিও জানিয়েছে, পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার কে-৫ সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইলও তৈরির পথে।