রবিবার সকালের বুলেটিনে আশা জাগল। দিল্লিতে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকেই সংক্রমণের হার বেড়েছিল। দেশের কোভিড কার্ভও তরতরিয়ে বাড়ছিল। দৈনিক সংক্রমণ যেখানে ২৯ হাজারে নেমেছিল, ফের তা বেড়ে ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরে নতুন সংক্রমণ ৪০-৪৫ হাজারের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রামিত ৪৫ হাজার ২০৯ জন।
দেশে কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে। তবে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমেছে। দেশে এখন ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজারের কাছাকাছি। অ্যাকটিভ কেসের হারও পাঁচ শতাংশের কম। কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমলে সংক্রমণের হার কমবে বলেই আশা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
করোনায় মৃত্যুহারও কমেছে। আজকের হিসেবে কোভিড ডেথ রেট ১.৪৬ শতাংশ। একদিনে সংক্রমণে মৃত ৫০১ জন। দু’সপ্তাহ আগেও ভাইরাস সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছিল। এখন ফের মৃত্যুহার কমেছে বলেই দাবি কেন্দ্রের।
ভাল খবর হল এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন রেট তথা আর নম্বর ফের কমেছে দেশে। দিল্লিতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধির পর থেকেই আর নম্বর এর ধাক্কায় বেড়ে ০.৯৫ পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছিল। এ সপ্তাহে ফের ০.৯০ পয়েন্টে নেমে গেছে। ইনস্টিটিউট অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক সীতাভ্র সিনহা বলেছেন, আর নম্বর ক্রমেই স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসছে, যার অর্থ হল কোভিড গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। আর নম্বর কমলে করোনা ট্রান্সমিশন রেট তথাসংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমবে। অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে। পাশাপাশি, একজন আক্রান্তের থেকে বেশিজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমবে।
চেন্নাইয়ের গবেষক বলছেন, দিল্লিতেও আর নম্বর কমে ০.৮৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে। সংক্রমণের হার কমছে বলেই আশা করা হচ্ছে। তবে রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশে এখনও আর নম্বর ১ এর বেশি। রাজস্থানে আর নম্বর ১.০৪ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১.০৯ পয়েন্টে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, হরিয়ানা, তেলঙ্গানায় আর নম্বর কমছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যাণ বলছে, দেশে সুস্থতার হার ধীরে ধীরে বাড়ছে। এখন আক্রান্ত রোগীদের থেকে সেরে ওঠাদের সংখ্যা বেশি। আরও একটা ইতিবাচক দিক হল, দেশে এখন করোনায় সুস্থতার হার ৯৪ শতাংশে পৌঁছে গেছে। ৮৫ লাখ রোগী কোভিড জয় করেছেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন বলছেন, দেশে কোভিড টেস্ট আরও বেড়েছে। করোনা পরীক্ষার নিরিখে বিশ্বের দু’নম্বর জায়গায় আছে ভারত। আইসিএমআরের হিসেবে এ যাবৎ ১৩ কোটি ১৭ লাখ কোভিড টেস্ট হয়েছে। যার মধ্যে ৪৯ শতাংশ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং ৪৬ শতাংশ আরটি-পিসিআর টেস্ট। গতকালই ১১ লাখের কাছাকাছি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দেশে। দেশে এখন দু’হাজারের বেশি ল্যাবরেটরিতে কোভিড টেস্ট হচ্ছে। যার মধ্যে সরকারি ল্যাব ১১৫৮টি ও বেসরকারি ৯৫৮টি। হাজারের বেশি ল্যাবরেটরিতে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট হচ্ছে। ট্রুন্যাট কোভিড টেস্ট হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে সাড়ে আটশো ল্যাবরেটরিতে।