উত্তেজনার পারদ চড়ছে। দু’পক্ষের হুমকি-পাল্টা হুমকিতে ইরান-আমেরিকার ছায়াযুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়ছে। এই উত্তেজনার আবহে ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফের ভিসা বাতিল করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল ইরানি বিদেশমন্ত্রীর। ভিসার আবেদন বাতিল হওয়ায় এই সফর বাতিল করতে হয়েছে তাঁকে।
১৯৪৭ সালের জাতিসংঘের ‘সদর দফতর চুক্তি’ মাফিক, জাতিসংঘে আমন্ত্রিত কূটনীতিকদের ভিসা দিতে বাধ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফের ভিসার আবেদন বাতিল হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে নানামহলে। ওয়াশিংটনের দাবি, নিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও বিদেশনীতির কারণেই ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এই ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
গত বছর এপ্রিল ও জুলাইতেও যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় যোগ দিয়েছিলেন জাভেদ জারিফ। তবে পরবর্তীকালে জাভেদ জারিফের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সংস্থায় ইরানি বিদেশমন্ত্রীর অর্থ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে, তাঁর বিদেশ সফরও সীমিত হয়ে পড়বে।
শুক্রবার ভোররাতে মার্কিন ড্রোন হানায় বাগদাদ বিমানবন্দরে বাইরে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড কোরের কুদস বাহিনীর প্রধান কাসেম সোলেমানির মৃত্যুর পরে দুই দেশের উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে। ইরানকে সম্প্রতি হুমকি দিয়ে ট্রাম্প টুইট করে বলেছেন, ইরানের আরও ৫২টি জায়গায় হামলা চালানোর জন্য বেছে রাখা হয়েছে। তার মধ্যে এমন কয়েকটি জায়গা রয়েছে যা ইরান ও তার সংস্কৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক বছর আগে ইরানে মার্কিন দূতাবাসে ৫২ জনকে পণবন্দি করার ঘটনা ঘটেছিল। তারই প্রতীক হিসাবে ৫২টি জায়গায় হামলার কথা ভাবা হয়েছে বলে জানিয়ে দেন ট্রাম্প। এই হুমকির পরে ট্রাম্পের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) তুলনা টেনে ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, কয়েক বছর আগে এ ভাবেই পশ্চিম এশিয়ার ঐতিহ্যশালী জায়গাগুলি ধ্বংস করে দিয়েছিল আইএস। ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের কোনও পার্থক্যই নেই।
২০১৩ সাল থেকে ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন জারিফ। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার পরমাণু চুক্তির সময় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। গত বছর সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।