দীর্ঘ সুসম্পর্ক দিতে পারে ইরানের হাতে বন্দি ১৮ ভারতীয় নাবিকের মুক্তি

পারস্য উপসাগরে ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকার আটক করে রেখেছে ইরান। সেই জাহাজের ২৩ জন নাবিক ও অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে ১৮ জনই ভারতীয়। ফলে উপসাগরের বুকে আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সংঘাতে এবার নতুন মোড়। যে ব্রিটিশে জাহাজটি আটক করা হয়েছে তার নাম স্টেনা ইমপেরো।

১৮ জন ভারতীয় জাহাজকর্মীকে ফিরিয়ে আনতে তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, দ্রুত ইরান সরকার এই পদক্ষেপে সায় দেবে। এর কারণ ভারতের সঙ্গে তার অতি সুসম্পর্ক। আটকে পড়া জাহাজ কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন রুশ ও অন্যান্যরা। এর জেরে চাঞ্চল্য বিশ্ব রাজনীতিতে।

বিবিসি জানাচ্ছে, পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালীতে ইরানের নৌ সেনা বাহিনী ব্রিটিশ পতাকাবাহী তেল ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো-কে আটক করলে ব্যাপক কূটনৈতিক আলোড়ন ছড়ায়। এর আগে চলতি মাসের প্রথমে সিরিয়ায় নিয়ে যাওয়া ইরানি তেলবাহী জাহাজকে আফ্রিকার কাছে জিব্রাল্টার উপকূলে আটক করে ব্রিটেন। তখনই প্রতিশোধের হুমকি দেয় ইরান। এবার হরমুজ প্রণালীতে সেই শোধ তারা নিয়েছে।

ইরানের জাতীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানাচ্ছে, ব্রিটিশ জাহাজটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন ভঙ্গ করে। তেহরানের দাবি, জাহাজটির সাথে মাছ ধরা নৌকার ধাক্কা লাগে। এর পর জাহাজের ক্যাপ্টেনকে থামতে বলা হলেও তিনি সেটা মানেননি। ফলে জাহাজটি আটক করা হয়।

এই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন ছড়ায় আন্তর্জাতিক মহল ও লন্ডনে। ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী জেরেমি হান্ট তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন- ইরান বিপজ্জনক পথ নিয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে ইরানের জন্য পরিস্থিতি খারাপ হবে। তবে তিনি কূটনৈতিক সমাধানের পথকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। ব্রিটিশ সরকার তাদের জাহাজগুলিকে পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালী এড়িয়ে চলাচল করতে পরামর্শ দিয়েছে।

আল জাজিরা ও এএফপি জানাচ্ছে, পারস্য উপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মুখোমুখি অবস্থানে ক্রমে জটিল আকার নিয়েছে। সৌদি আরব ও আমিরশাহীর জাহাজে রহস্যজনক হামলার পরেই ওয়াশিংটন সরাসরি ইরানকে দায়ি করে উপসাগরে রণতরী পাঠায়। সেই দাবি উড়িয়ে ইরান তাদের নৌ বাহিনী মোতায়েন করে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ড, হাসান রুহানি বলেছেন, কোনওভাবেই মার্কিন দাদাগিরি সহ্য করা হবে না। ইরানের আরও হুমকি, একটাও গুলি চালানো হলে বিশ্ব তেলের বাজারকে অস্থিতিশীল করা হবে। এসবের মধ্যেই মার্কিন ড্রোন সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে এই অভিযোগে গুলি করে ধংস করে ইরানি সেনা। এতে চরম ক্ষিপ্ত হয় মার্কিন সরকার। ইরানের আরও হুমকি- হামলা হলেই মার্কিন ও ব্রিটিশদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির জ্বালানী ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.