তথ্য সুরক্ষা এবং সাইবার ক্রাইম আদালতের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ : প্রধানমন্ত্রী

দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সর্বদাই বিচার ব্যবস্থার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল| এছাড়াও পরিবর্তিত সময়ে, তথ্য সুরক্ষা (Data protection) এবং সাইবার অপরাধের (Cyber ​​crime) মতো বিষয়গুলিও আদালতের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসাবে উঠে এসেছে| শনিবার আন্তর্জাতিক জুডিশিয়াল সম্মেলন ২০২০-তে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)| প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সর্বদাই বিচার ব্যবস্থার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল| এছাড়াও পরিবর্তিত সময়ে, তথ্য সুরক্ষা এবং সাইবার অপরাধের মতো বিষয়গুলিও আদালতের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসাবে উঠে এসেছে| দেশের প্রতিটি আদালতকে ই-কোটঙ ইন্টিগ্রেটেড মিশন মোড প্রকল্পের সঙ্গে একীভূত করাও সরকারের প্রচেষ্টা| ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিডের প্রতিষ্ঠা আদালতের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলবে|


আন্তর্জাতিক জুডিশিয়াল সম্মেলন (Judicial Conference) ২০২০-তে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, এই সম্মেলন একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের গোড়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে| ভারত-সহ গোটা বিশ্বে বৃহত্তম পরিবর্তনের জন্য এই দশক| এই পরিবর্তন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত, প্রতিটি ক্ষেত্রেই হবে| এই পরিবর্তন যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত হওয়া উচিত| এই পরিবর্তন প্রত্যেকের স্বার্থে হওয়া উচিত| প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, পরমপুজ্য বাপুর জীবন সত্য ও সেবায় নিবেদিত ছিল, যা কোনও বিচার বিভাগের ভিত্তি হিসাবে বিবেচিত হয় এবং আমাদের বাপু নিজেও একজন আইনজীবী ছিলেন| জীবনের প্রথম আইনি লড়াই সম্পর্কে, নিজের আত্মজীবনীতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন গান্ধীজী|
বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের প্রচুর আস্থা রয়েছে| সম্প্রতি বেশ কিছু বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে সম্পর্কে গোটা বিশ্বে আলোচনা হয়েছে| রায় ঘোষণার আগে বহু আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল| আদৌ কি কিছু হয়েছিল? প্রত্যেকেই বিচার ব্যবস্থার সিদ্ধান্তকে সাদরে গ্রহণ করেছেন| সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও অনেকবার সংবিধানের তিনটি স্তম্ভই দেশের জন্য সঠিক পথ খুঁজে দিয়েছে| আমরা গর্বিত যে ভারতে এই ধরনের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে| বিগত ৫ বছরে ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই ঐতিহ্যকে আরও জোরদার করেছে|’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘যে সমস্ত আইনের প্রাসঙ্গিকতা এখন বিলুপ্তির পথে, সেই ধরনের প্রায় ১,৫০০টির মতো পুরনো আইন সমাপ্ত করা হয়েছে| সমাজকে শক্তিশালী করে তুলবে এমন ধরনের নতুন আইন দ্রুততার সঙ্গে প্রণীত হয়েছে| অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে কাজ করছে সরকার|’ এদিনের সম্মেলনে ‘জেন্ডার জাস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর বিষয়ও রাখা হয়| এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই সম্মেলনে ‘জেন্ডার জাস্ট ওয়ার্ল্ড’ বিষয়ও রাখা হয়েছে| জেন্ডার জাস্টিস ছাড়া বিশ্বের কোনও দেশ-কোনও সমাজই পূর্ণ বিকাশ লাভ করতে পারবে না এবং ন্যায়বিচারের দাবি করতে পারবে না|


মহিলা ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত বিশ্বের সেই সমস্ত দেশের মধ্যে অন্যতম যেখানে স্বাধীনতার পর থেকেই মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে| স্বাধীনতার ৭০ বছর পর, এখন নির্বাচনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে| একবিংশ শতাব্দীর ভারত (India) অন্যান্য দিকগুলিতেও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে| বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও, এই অভিযানের কারণেই প্রথমবার এডুকেশন এনরোলমেন্টে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বেশি হয়ে উঠেছে| একইভাবে সামরিক বাহিনীতে মেয়েদের নিযুক্তি হোক, ফাইটার পাইলটের নির্বাচন প্রক্রিয়া হোক, খনিতে রাতে কাজ করার স্বাধীনতা হোক, সরকারের দ্বারা পরিবর্তন আনা হয়েছে| প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, পরিবর্তনের এই যুগে ভারতও নতুন উচ্চতা অর্জন করছে| নতুন পরিভাষা তৈরি করা হচ্ছে এবং পুরনো ধারনা পরিবর্তন করা হচ্ছে| আগে বলা হত, দ্রুততার সঙ্গে উন্নয়ন একসঙ্গে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব নয়| ভারত এই ধারণায় পরিবর্তন এনেছে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.