লোকসভার পরে মিশন রাজ্যসভা। গত পাঁচ বছর রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা ছিল না বিজেপির। ফলে বিরোধীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিল রাজ্যসভায় আটকে দিতে পেরেছে। কিন্তু দ্বিতীয়বার লোকসভায় নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাওয়ার পরে রাজ্যসভাতেও গরিষ্ঠ হওয়ার জন্য ঝাঁপাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহরা। সংসদের দুই কক্ষেই যদি বিজেপির গরিষ্ঠতা থাকে, তাহলে তিন তালাক, মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট ও নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী পাশ করানো সহজ হবে।
লোকসভায় যেমন সাংসদরা সরাসরি মানুষের ভোটে নির্বাচিত হন, রাজ্যসভার সদস্যরা নির্বাচিত হন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কদের দ্বারা। একটা রাজ্যে যে দলের যত বেশি বিধায়ক থাকবেন, সংসদের উচ্চকক্ষে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর সম্ভাবনা তত বেশি। রাজ্যসভার এমপি ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন পাঁচ বছরের জন্য। তবে রাজ্যসভার সকলে একই সময়ে নির্বাচিত হন না।
রাজ্যসভায় ২৪৫ টি আসনের মধ্যে এনডিএ-র এমপির সংখ্যা ১০১। এছাড়া তিন মনোনীত সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, মেরি কোম ও নরেন্দ্র যাদব এবং তিন নির্দল এমপি বিজেপিকে সমর্থন করেন। সব মিলিয়ে রাজ্যসভায় বিজেপির শক্তি এখন ১০৭। আগামী বছরের শুরুতেই ইউপিএ-র সাংসদ কে টি এস তুলসীর মেয়াদ শেষ হবে। তাঁর জায়গায় এনডিএ নিজেদের কাউকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে।
এনডিএ-র আশা, ২০২০ সালের নভেম্বরের মধ্যে এনডিএ ১৯টি বাড়তি আসন পাবে। এই আসনগুলি আসবে ১৪ টি রাজ্য থেকে। তার মধ্যে আছে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, তামিলনাড়ু, গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশ। তার ফলে রাজ্যসভায় তাদের মোট আসন সংখ্যা হবে ১২৫। অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি আসন থাকবে তাদের হাতে। গত ১৫ বছরে এই প্রথমবার কোনও সরকার রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা পেতে চলেছে।
উত্তরপ্রদেশে ৪০৩ সদস্যের বিধানসভায় এনডিএ পেয়েছে ৩১০ টি। সেখান থেকে রাজ্যসভায় বেশ কয়েকজন সাংসদকে জিতিয়ে আনতে পারবে বিজেপি। এছাড়া তামিলনাড়ুতে থেকে ছ’টি, অসমে তিনটি, রাজস্থানে দু’টি এবং ওড়িশা থেকে একটি রাজ্যসভা আসন পেতে পারে। কর্ণাটক, মিজোরাম, মেঘালয়, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড থেকেও সম্ভবত তারা একটি করে আসন পাবে। রাজস্থান, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগড়ে তাদের কিছু আসন খোওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চলতি বছরের শেষে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও রাজস্থানে বিধানসভা ভোট হবে। সেখানে যদি মোদী ঝড় কাজ করে, তাহলে রাজ্যসভায় আরও কয়েকজন এমপি পাবে এনডিএ।