সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার পর এ বার নৌসেনার শক্তি বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে ভারত। আর তার জন্য প্রথমেই শক্তিশালী সাবমেরিন তৈরি করার পদক্ষেপ নিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রোজেক্ট- ৭৫ ইন্ডিয়া’। এই প্রজেক্টের অধীনে ৬টি ধ্বংসাত্মক সাবমেরিন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এই প্রকল্প রূপায়নে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে।
এই মেগা প্রকল্পের জন্য বিদেশি শক্তির সাহায্য নিতেও প্রস্তুত ভারত। তারজন্য ইতিমধ্যেই এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট ( ইওআই ) তৈরি করা হয়েছে। যে সব দেশ ভারতকে এই প্রকল্প রূপায়নে সাহায্য করতে রাজি হবে তাদের সঙ্গে এই ইওআই-এর মাধ্যমে চুক্তি করা হবে। নৌসেনা সূত্রে খবর, মুম্বইয়ের মাজাগন ডকইয়ার্ডে যে স্করপিন শ্রেণীর সাবমেরিন তৈরি করা হচ্ছে, তার থেকে প্রায় দ্বিগুণ বড় ও ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এই প্রোজেক্ট-৭৫ ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে তৈরি সাবমেরিন। নৌসেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ইতিমধ্যেই ইওআই-এর ড্রাফট তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। যেসব দেশ আমাদের এই প্রকল্পে সাহায্য করতে প্রস্তুত, তাদের কাছে এই চুক্তিপত্র পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তাদের কাছ থেকে সব ধরণের মতামত নিতে আমরা তৈরি। তারপরেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।”
ভারতীয় নৌসেনার তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি সাবমেরিনগুলিতে অন্তত ১২টি ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল থাকবে। এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি শিপ ক্রুজ মিসাইল এবং ১৮ টি টর্পেডো থাকবে। এই সব অত্যাধুনিক অস্ত্র ছাড়াও এই সাবমেরিনের গতি অন্য সাবমেরিনের তুলনায় অনেক বেশি হবে। স্করপিন সাবমেরিনগুলিতে সাধারণত অ্যান্টি শিপ ক্রুজ মিসাইল থাকে। ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল কেবলমাত্র প্রোজেক্ট -৭৫ ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে তৈরি সাবমেরিনগুলিতে থাকবে।
এই প্রকল্পকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ একজন নেভি অফিসারকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়েছেন। এছাড়াও একটি প্রোজেক্ট কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। নৌসেনার উচ্চপদস্থ বেশ কিছু কর্তা এই কমিটিতে রয়েছেন। ভারতীয় নৌসেনা সূত্রে খবর, সাধারণ সাবমেরিনের সঙ্গে এই অত্যাধুনিক সাবমেরিনের একটা মেলবন্ধন ঘটাতে চাইছে নৌসেনা। সব জায়গায় দু’ধরণের সাবমেরিনই প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে।
এই মুহূর্তে ভারতের কাছে ১০০’র বেশি সাবমেরিন রিয়েছে। সেখানে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২০টি সাবমেরিন রয়েছে। সেনা সূত্রে খবর, জলপথে চীনকে টক্কর দেওয়ার জন্যই এই উন্নত প্রযুক্তির সাবমেরিন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষার তিনটি ক্ষেত্রেই সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে চাইছে ভারত।