প্রত্যাশিতই ছিল। সেইমতো দেশজুড়ে লকডাউনের (Lockdown) মেয়াদ আরও দু’সপ্তাহ বাড়ল। চতুর্থ দফায় দেশজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল আরও ১৪ দিন। অর্থাৎ ৩১ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার এমনটাই জানান হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে।
চতুর্থ দফার লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফ থেকে সুর্নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সরকারের কাছে। তার পরই বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করা হয়। কাল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের এই চতুর্থ পর্বে কোথায় কোথায় কী কী বিধি নিষেধ জারি থাকছে, কী কী ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা ওই নির্দেশিকায় জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়, ৩১ মে পর্যন্ত ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা স্থগিত থাকবে। তবে ঘরোয়া চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা, ঘরোয়া অ্যাম্বুলেন্স এবং কেন্দ্রের তরফে অনুমতি পাওয়া ক্ষেত্রেই উড়ান পরিষেবা জারি থাকবে।
পাশাপাশি ‘কনটেনমেন্ট জোন’ ছাড়া সর্বত্র আন্তঃরাজ্য যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি পরিষেবায় এবার ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দুটি রাজ্যের পারস্পরিক সম্মতির প্রয়োজন হবে।
একাধিক রাজ্যের আর্জি মেনে রেড, গ্রিন, ও অরেঞ্জ জোন নির্ধারণের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দেওয়া হল। তবে কেন্দ্রের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মাপকাঠি মেনে জোন নির্ধারণ করতে হবে।
তবে বন্ধ থাকবে মেট্রো রেল পরিষেবা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রথম তিন দফার মতো এবারও সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, পানশালা, অডিটোরিয়ামের ঝাঁপ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পযর্ন্ত জারি করা হবে ‘নাইট কার্ফু’। প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা জারি করতে পারবে স্থানীয় প্রশাসন। তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরনো যাবে না। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বাদের বাইরে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে। ১০ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের বাইরে বেরতেও নিষেধ করা হয়েছে।
দেশে সর্বোচ্চ হারে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হলেন ৪৯৮৭ জন মানুষ। যা কিনা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বাধিক সংখ্যায় করোনা সংক্রমণ। দেশজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৭ জন।
মোট আক্রান্তের মধ্যে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৭২-এ। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৪ হাজার ১০৯ জন এবং দেশে বর্তমানে অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে ৫৩ হাজার ৯৪৬ টি। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে এখবর সামনে এসেছে। শেষ ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের।
দেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক করোনা সংক্রামিত রাজ্য মহারাষ্ট্র। সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শনিবারি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬০৬ জন মানুষ। যার জেরে মহারাষ্ট্রে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পার করে ফেলেছে ৩০ হাজারের গণ্ডি। দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই করোনা সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। শেষ ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের।
এই অবস্থায় দেশজুড়ে লকডাউনের (Lockdown) মেয়াদ আরও বাড়বে তা জানাই ছিল । এছাড়া প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ দফার লকডাউনের কথা আগেই জানিয়েছিলেন । তাই প্রত্যাশিতই ছিল।