দেবভূমি উত্তরাখণ্ডে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ কেদারনাথ মন্দিরে আদি গুরুর নবনির্মিত সমাধির ওপর গুরু শঙ্করাচার্যের ১২ ফুট লম্বা একটি মূর্তির উন্মোচন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস, বিগত এক শতাব্দী ধরে যত পূন্যার্থী চারধাম দর্শনের জন্য আসছেন, আগামী দশ বছরে তার থেকেও বেশি মানুষের পা পড়বে চারধামে। আর উত্তরাখণ্ডে যে গতিতে পরিকাঠামোগত আমূল পরিবর্তন আসছে, তাতে এই পথ আরও সুগম হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ আদি গুরু শঙ্করাচার্যের ১২ ফুট লম্বা একটি মূর্তির উন্মোচনের আগে কেদারনাথে রূদ্রাভিষেক পুজা করেন নরেন্দ্র মোদী। তখনই নিজের মনের এই বিশ্বাসের কথা জানান তিনি। বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আপনাদের আশ্বস্ত করছি…”
সামনেই উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আর তার আগে আজ ২২৫ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং সংস্কারমূলক কাজের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে পঞ্চমবার কেদারনাথ দর্শন করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর এই প্রথম।
একইসঙ্গে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিরও ভূয়সি প্রশংসা করেন তিনি। রাজ্য সরকার যেভাবে উন্নয়নের জন্য কাজ করছে তা দেখে খুশি তিনি। মোদী বলেন, “চলতি শতাব্দীর তৃতীয় দশক হবে উত্তরাখণ্ডের। উত্তরাখণ্ড আগামী দিনে উন্নয়নের নতুন শিখর স্পর্শ করবে …”
কেদারনাথে আরও নতুন সুযোগ সুবিধার কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদী। আশ্বাস দিয়েছেন, তীর্থযাত্রীদের জন্য চারধাম যাত্রার পথকে আরও সহজ করে তুলবে। মন্দাকিনী নদীর ধার দিয়ে একটি সুরক্ষা প্রাচীর তৈরি করা হবে, যা ২০১৩ সালের মতো বন্যাকে আটকাতে পারবে এবং যাত্রাপথকে আরও নিরাপদ করবে। এছাড়াও, তীর্থযাত্রীদের জন্য উন্নত থাকার ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান তিনি। শুধু তাই নয়, মন্দিরের পুরোহিতদের জন্য তৈরি করা হবে স্থায়ী আবাসন, যা পাহাড়ের কোলে হাড় হিম শীতে তাদের সমস্যার সমাধান করবে।
আজ কেদারনাথে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জীবনে এমন কিছু অভিজ্ঞতা হয় যা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।” আজ সেখানে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্যও রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই দশক উত্তরাখণ্ডকে বদলে দিয়েছে সমতলের পাহাড়ের যোগাযোগে উন্নতিতে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আগামী কয়েক বছরে পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষদের আর কোথাও যেতে হবে না।
সকালেই দেরাদুন হয়ে কেদারনাথে আসেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে এসেই প্রথমেই কেদারনাথ মন্দিরে পুজো দেন মোদী এবং বেশ কিছুটা সময় তিনি সেখানে প্রার্থনা করেন। তারপর পায়ে হেঁটে মন্দিরের পিছনে “ভীম শিলা” পরিদর্শন করেন। ২০১৩ সালের জুনের বন্যার সময় বিশাল পাথরটি পাহাড়ের নিচে গড়িয়ে পড়েছিল এবং মন্দিরে ঠিক পিছনে এটি গিয়ে অবস্থান করেছিল। মনে করা এই শিলাই মন্দিরটিকে রক্ষা করেছিল।