নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যখন কলকাতা থেকে দিল্লি-বিক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, তখন দেশের সব নাগরিককে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সোমবার দুপুরে একটি টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সব মানুষকে আশ্বস্ত করে দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে চাই যে, নাগরিকত্ব আইনের জন্য কোনও নাগরিকের কোনও ক্ষতি হবে না। তা তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। এই আইন নিয়ে দেশের কোনও নাগরিকের কোনও উদ্বেগের কারণ নেই। দেশের বাইরে বছরের পর বছর ধরে যে মানুষগুলো নিগৃহীত হয়েছেন, যাঁদের ভারত ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তাঁদের জন্যই এই আইন”।
প্রধানমন্ত্রীর এই টুইট করার কারণ স্পষ্ট। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গোড়ায় শুধু অসম ও ত্রিপুরায় বিরোধিতা হচ্ছিল। কারণ, সেখানকার ভূমিপুত্ররা আশঙ্কা করছেন, এই আইন বাস্তবায়নের ফলে শরণার্থী বাঙালিরা নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। তাতে নিজভূমে তাঁরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন। কিন্তু তার পর সেই আগুন ছড়ায় বাংলা, দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গে যেমন সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি তীব্র আন্দোলনে নেমে পড়েছে, তেমনই দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রবিবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেই প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ লাঠি চালানোয় দেশ জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গতকালই প্রধানমন্ত্রী কিছুটা তীর্যক মন্তব্য করে বলেছিলেন, কারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তা তাঁদের পোশাক দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
এদিন টুইট বার্তায় সে কথার পুনরাবৃত্তি না করলেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে তা আমরা চলতে দিতে পারিনা। যে হিংসাত্মক তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আলোচনা ও বিতর্কের মধ্যে দিয়ে সমাধানের পথ খোঁজাই আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য। সরকারের সম্পত্তি নষ্ট করে মানুষকে বিপদে ফেলা সঠিক পথ নয়”। তাঁর কথায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি হল সবাই মিলে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা এবং প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষের ক্ষমতায়ণের চেষ্টা করা। বিশেষ করে গরিব, পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।