ভারতে চাই ফুড প্রসেসিং রেভলিউশন। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে বিপ্লব ঘটানোর জন্য কৃষিক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রবিবার একথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “কৃষকরা যে ফসল উৎপাদন করেন, তার জন্য এখন আরও অনেক বাজারের সুযোগ পাওয়া উচিত। কৃষকদের কেবল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য দেশের ক্ষতি হয়েছে। দেশের কৃষিক্ষেত্রকে প্রক্রিয়াকরণ করা খাদ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে পরিণত করতে হবে।”
এদিন কৃষিক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের পক্ষে সওয়াল করেন মোদী। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত কেবল সরকারই কৃষি নিয়ে নানা গবেষণা করেছে। এবার বেসরকারি সংস্থাকেও গবেষণায় অংশ নিতে হবে।” তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে ভারতে নানাভাবে চুক্তিচাষ হয়ে চলেছে। এখন বেসরকারি সংস্থাগুলি যাতে কৃষির উন্নতিতে ভূমিকা নিতে পারে, তারও ব্যবস্থা করতে হবে।
রবিবারই ভারত কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত পাঁচ রাজ্যে সফর শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করাই তাঁর উদ্দেশ্য। এদিন মোদী বলেন, সরকার কৃষিক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ১৬.৫০ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পশুপালন, ডেয়ারি ও ফিশারির ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ পরিকাঠামোয় ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ১২ কোটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষককে সাহায্য করার জন্য নানা কর্মসূচি নিয়েছে সরকার।
শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৬ তম আলোচনা সভায় কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভারতের হয়ে বক্তব্য পেশ করেন ইন্দ্র মণি পাণ্ডে। তিনি বলেন, কৃষকদের স্বার্থের কথা ভেবেই এই আইনগুলি পাশ করা হয়েছে। পাণ্ডে বলেন, “২০২৪ সালের মধ্যে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। তিনটি কৃষি আইন পাশ করার উদ্দেশ্য ছিল যাতে নিজেদের উৎপাদিত ফসলের বেশি দাম পান কৃষকরা। এই আইনের মাধ্যমে বিশেষ করে কম জমি আছে এমন কৃষকরা বেশি সুবিধা পেতেন। কৃষকদের আন্দোলনকে শ্রদ্ধা দেখিয়েছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে।”
রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট সম্প্রতি বলেন, যেসব সাংবাদিক ও সমাজকর্মী কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে প্রতিবাদ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হচ্ছে। এটা মানুষের অধিকার লঙ্ঘনের সমান।
পাণ্ডে বলেন, “আমরা হাই কমিশনারের কিছু মন্তব্য শুনেছি। তিনি বোধহয় জানেন না এই সমস্যাগুলির মোকাবিলা করার জন্য ভারত সরকার কীভাবে চেষ্টা করেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষক আন্দোলনের নামে দিল্লিতে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে উনি মুখ খোলেননি। জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে তাঁর অবস্থান নতুন নয়। মানবাধিকার কমিশনের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব থাকা উচিত নয়। কিন্তু আমরা দুঃখিত হাই কমিশনারের মন্তব্যে অনেক তথ্যের অভাব ও পক্ষপাতিত্ব ছিল।”