এই পরিবার ধর্মীয় মেরুকরণ মানে না। জাত-পাত-ধর্মের অন্ধকারে বদ্ধ নয় তাঁদের জীবন। সরকার যিনি গড়বেন, তিনি যেন দেশ-দশের কথা ভাবেন, এমনটাই চান মেনাজ বেগম ও তাঁর পরিবার। এবং সেটা যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই সফল ভাবে পারবেন সেটাও মনে প্রাণে বিশ্বাস করে মেনাজের পরিবার। স্বজাতে, স্বধর্মে কী প্রতিক্রিয়া হবে সেটা নিয়ে মোটেও ভাবিত নন তাঁরা, তাই নিজের ছেলের নাম নরেন্দ্র মোদী রাখতেও দু’বার ভাবেননি মেনাজ ও তাঁর স্বামী।
২৩ মে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। গোটা দেশ যখন মোদী-জ্বরে কাবু, তখনই জন্ম নেয় মেনাজের সন্তান। বছর ত্রিশের মেনাজ জানিয়েছেন, চারদিকে তখন ‘মোদী-মোদী-মোদী’ আস্ফালন। হাসপাতালে বিছানায় শুয়েও ভোটের ফলাফলের সব খবরই তাঁর কানে এসেছিল। চিকিৎসক থেকে নার্স, সকলেরই মুখেই তখন মোদী-চর্চা। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে এক লহমায় মেনাজেরও মোদীর কথাই মনে হয়েছিল। মনে মনে নামটাও ঠিক করে ফেলেছিলেন তখনই।
উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা শহরে ছোট্ট পরিবার মেনাজের। কর্মসূত্রে স্বামী থাকেন দুবাইতে। মেনাজের কথায়, “দুবাইতে স্বামীকে ফোন করে ছেলের জন্মের খবর দিই। সেই সঙ্গে আমার ইচ্ছার কথাও জানাই। স্বামী শুধু আমাকে জিজ্ঞেস করেন, মোদী আবার ক্ষমতায় আসছেন কি না। বিজেপির জয়ের কথা শুনে তিনিও আমাকে ছেলের নাম রাখতে বলেন নরেন্দ্র মোদী। ”
এই নামে তাঁর পরিবারের কোনও আপত্তি নেই, জানিয়েছেন মেনাজ। তিনি চান তাঁর ছেলে একদিন মোদীর মতোই দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে। মেনাজের কথায়, “আমার ছেলে মোদীজির মতো ভালো কাজ করুক, ওনার মতো সফল হোক। দেশের মানুষের কথা ভাবুক, তাই ছেলের নাম রেখেছি মোদীজির নামেই।” ধর্মীয় মেরুকরণ, ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি, হিন্দু-মুসলিম তরজা তুলে দিকে দিকে চরম উত্তেজনা-টানাপড়েনের আবহে এক নজির গড়ল উত্তরপ্রদেশের এই মুসলিম পরিবার।