রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, ১৬ অক্টোবর ২০১৯
স্বয়ংসেবকদের কঠোর পরিশ্রম ও সমাজে অনুকূল বাতাবরণের জন্য আর এস এস এর কাজ দেশজুড়ে ও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
বিশেষভাবে ব্যাপক সংখ্যায় ছাত্র ও যুবক সংঘের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এখানকার ‘শিক্ষা ও অনুসন্ধান বিশ্ববিদ্যালয়’ – এ গত তিনদিন ব্যাপী আয়োজিত অখিল ভারতীয় কার্যকরী মন্ডলের বৈঠকের শেষে আর এস এস – এর সহ সরকার্যবাহ ডঃ মনমোহন বৈদ্য এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে ডঃ বৈদ্য জানান যে শ্রীরাম মন্দির নির্মাণ কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা জাতির বিশ্বাসের প্রশ্ন। ধারা ৩৭০ বাতিল সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন এটা আমাদের সংবিধানের একটি সাময়িক ব্যবস্থা ছিল। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে জাতীয়তাবাদী চেতনা সম্পন্ন ব্যক্তিদের হত্যা করা হচ্ছে, যেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
ডঃবৈদ্য বলেছেন, সংঘ বিশ্বাস করে কোনও সরকারই সমাজের জন্য সব কিছু করতে পারে না। তাই সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং সেজন্য সংঘের স্বয়ংসেবকরা সমাজকে সংস্কারিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ১৯৯৮ থেকে গ্রাম বিকাশের যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তার ফল এখন দেখা যাচ্ছে। সংঘের স্বয়ংসেবকরা সমাজের জাতিগত বৈষম্য দূর করতে ও সমাজের সকল অংশের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে সৌহার্দের বাতাবরণ গড়ে তুলতে সংঘের ‘সামাজিক সমরসতা’ উদ্যোগের মাধ্যমে কাজ করছেন। তারা ভারতীয় প্রজাতির গোবংশের সংরক্ষণ, পালন ও সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছেন। ‘অনু পরিবারের’ প্রাদুর্ভাবের ফলে পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় শুরু হয়েছে। তা ফিরিয়ে আনতে সংঘের স্বয়ংসেবকরা ‘কুটুম্ব প্রবোধন’ – এর মাধ্যমেকাজ করছেন। পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য স্বয়ংসেবক রা তিনটি উদ্যোগ নিয়েছে (3 Ps) – planting trees বা গাছ লাগানো; promoting use of less water বা জলের কম ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া; promoting no plastic usage অর্থাৎ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে উৎসাহ দেওয়া।
ডঃ বৈদ্য বলেন যে বর্তমানে দেশে সংঘের ৫৭৪১১ টি শাখা, ১৮৯২৩টি সাপ্তাহিক মিলন আছে। ২০০৯ – এ সংঘের কাজ বৃদ্ধির বিশেষ যোজনা নেওয়া হয়। সেই অনুসারে ২০১০এর পর থেকে সংঘ শাখার বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। ২০১০ – এর পর থেকে ১৯৫৮৪টি শাখা বেড়েছে ২০১০ থেকে ২০১৪এর মধ্যে প্রায় ৬০০০শাখা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৬০০০ব্লকে সংঘ সক্রিয় যা মোট ব্লক সংখ্যার প্রায় ৯০শতাংশ।
ডঃ বৈদ্য বলেন শাখায় আসা ব্যক্তিদের প্রায় ৬০% ছাত্র ও যুবক। প্রায় ২৯ শতাংশের গড় বয়স ২০থেকে ৪০ -এর মধ্যে এবং ৪০ বছরের উপরে শাখায় আসা স্বয়ংসেবক এর সংখ্যা প্রায় ১১ শতাংশ।
২০১৩ সালে সংঘের ‘জয়েন আর এস এস’ নামে অন লাইন উদ্যোগ খুবই ভালো সারা পায়। অন্যদের সঙ্গে যুবক ও ছাত্ররা আর এস এসে যোগ দিতে খুবই আগ্রহ দেখিয়েছে। ২০১৩ – তেই ৮৮৮৪৩জন ‘জয়েন আর এস এস’ – এর মাধ্যমে সংঘের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।২০১৪থেকে ২০১৬ প্রতিবছর প্রায় ৯০০০০ থেকে ৯৫০০০ জন এই অনলাইন উদ্যোগের মাধ্যমে সংঘের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ২০১৭ তে প্রায় ১.২৫ লক্ষ, ২০১৮ তে প্রায় ১.০৫ লক্ষ, ২০১৯ -এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১.০৩ লক্ষ ব্যক্তি সঙ্গে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সংঘের স্বয়ংসেবকদের প্রশিক্ষণের উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই উদ্দেশ্যে একাধিক কার্যকর্তা বিকাশ বর্গ আয়োজিত হচ্ছে। এই বৈঠকে প্রশিক্ষণকে আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য পথ ও উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
ডঃ বৈদ্য বলেন যে ‘প্রান্ত’ স্তরের কার্যকর্তারা এই অখিল ভারতীয় কার্যকরী মন্ডলের বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন। প্রায় ৩৫০ জন প্রতিনিধি এই তিন দিন ব্যাপী বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন। শ্রী অরুন কুমার,অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ এবং শ্রী নরেন্দ্র ঠাকুর,অখিল ভারতীয় সহ প্রচারও এই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।