সোমবার সকালে কাশ্মীরে নির্বাচনী প্রচারে সংবিধানের ৩৫এ ধারা তুলে এনে বিজেপি তথা মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা তথা কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। বলেছিলেন, একদিন জম্মু-কাশ্মীরের আলাদা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হবে। কয়েক ঘণ্টা পরেই আবদুল্লাহর করা এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোটসঙ্গী কংগ্রেসকেও একহাত নেন মোদী। ওমর আবদুল্লাহর করা মন্তব্যের জবাবদিহি কংগ্রেসের কাছে ছেয়েছেন মোদী। কংগ্রেসের তরফে কোনও জবাব না দেওয়া হলেও জবাব দিয়েছেন ওমর আবদুল্লাহ নিজেই।
সোমবার সকালে কাশ্মীরের বন্দিপোরাতে নির্বাচনী প্রচারে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “যারা সংবিধানের ৩৫এ ধারা তুলে নেওয়ার কথা বলছে, তাদের মনে রাখা দরকার একদিন জম্মু-কাশ্মীরের আলাদা প্রধানমন্ত্রী ও সদর এ রিয়াসত ( রাষ্ট্রপতি ) হবে।” তিনি আরও বলেন, “অন্য রাজ্যগুলির থেকে জম্মু-কাশ্মীর আলাদা। এই রাজ্যকে স্পেশ্যাল রাজ্যের তকমা দেওয়া হয়েছে ভারতের সংবিধানে। আর তাই এই রাজ্যের জন্য সংবিধানে আলাদা বেশ কিছু ধারা রয়েছে। কিন্তু আমরা জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্ব পরিচয় ও সংবিধান চাই।”
ওমর আবদুল্লাহর এই মন্তব্যের পরেই আসরে নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আবদুল্লাহকে সরাসরি নাম না করে আক্রমণ করেন মোদী। হায়দরাবাদের সভা থেকে তিনি বলেন, “উনি বলেছেন, উনি সময়কে পিছিয়ে নিয়ে যাবেন এবং ১৯৫৩ সালের আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। ভারত ও কাশ্মীরের জন্য আলাদা আলাদা সংবিধান, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হবে।” ওমরের এই বক্তব্যের জবাব তিনি চেয়েছেন কংগ্রেসের কাছে। মোদী বলেন, “কংগ্রেসকে উত্তর দিতে হবে তাদের জোটসঙ্গী কেন এই কথা বলেছেন।”
কংগ্রেস জবাব না দিলেও মোদীর প্রশ্নের জবাব অবশ্য টুইটারে দিয়েছেন ওমর আবদুল্লাহ। টুইট করে তিনি বলেন, “আমি খুব আনন্দিত যে প্রধানমন্ত্রী আমার কথা শুনেছেন এবং আমার কথায় গুরুত্ব দিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমার কথা সাংবাদিকদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিজেপির আইটি সেলকেও আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” তারপর নিজের জোটসঙ্গী কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলির উদ্দেশে বার্তা দিয়ে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “কংগ্রেস সহ সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে আমি অনুরোধ করছি, আমার কথার জন্য আমার থেকে আপনারা দূরত্ব তৈরি করবেন না। তার থেকে প্রধানমন্ত্রী যে সবাইকে মিথ্যে কথা বলছেন, সেটা আরও বেশি করে প্রচার করুন।”
জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সংবিধানের ৩৫এ ধারায় যে বিশেষ সুবিধার কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছে বিজেপি। অনেক নেতাই দাবি করেছেন, এই আইন তুলে দেওয়া উচিত। বিজেপির এই দাবির বিরোধিতা করেই জম্মু-কাশ্মীরের পঞ্চায়েত নির্বাচন বয়কট করেছিল বেশিরভাগ আঞ্চলিক দল। এই বিষয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ভোটের আগে শুনানি বন্ধ রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালত।