ওড়িশার মোদি নামে খ্যাত ভারতবর্ষের সর্বাপেক্ষা সাধারণ জীবনযাপনকারী সাংসদ বালেশ্বর থেকে নির্বাচিত প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্বলাভের পর যখন বামপন্থীদের তথাকথিত শ্রেণীরাজনীতিই প্রশ্নের মুখে তখন নির্লজ্জ বামপন্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু করেছে এক অদ্ভুত প্রোপাগান্ডা প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গী নাকি একজন খুনি যদিও প্রমাণ অভাবে নাকি ওনাকে শাস্তি দেওয়া যায়নি।

হ্যাঁ উনি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সেবার মুখোশ ধরে খ্রীষ্টধর্মের প্রচার ও প্রসার কে রুখে দিতে পেরেছিলেন নিরলস সেবা কাজের মাধ্যমেই। একবার ভেবে দেখুন উনি এই কাজ না করলে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে কংগ্রেস ও বামপন্থীদের পরিকল্পিত অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে যেমন নির্বিচারে সেবার মুখোশ পড়ে ধর্মান্তরকরণ করা হয়েছে ঠিক একই ঘটনা ওড়িশা, ছত্তিশগড় ও ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও হত। ওনার জন্যই দেশদ্রোহী জারজদের এই পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

বামপন্থীরা এটাও কি করে ভুলে গেল যে শুধুমাত্র “খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে” স্টেইনিসের হত্যা হয় নি।ওখানকার বনবাসীদের অভিযোগ ছিল যে উনি ধর্মান্তরিত করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।আর,ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের সাথে পিতৃপুরুষের ধর্মে থেকে যাওয়া বনবাসীদের প্রায়ই নানা কারণে ঝামেলা বাঁধছিল। তবে এটা ঠিকই যে ধর্মান্তরিত করার অপরাধে নিশ্চিতরূপেই কাউকে হত্যা করা যায় না।কিন্তু,এই জ্ঞানের কথাটা স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে হত্যা করার পরে কারো মনে আসেনি।কার ও মনে হয়নি যে খুবই অন্যায় হল।এমনকি বড় বড় বোলচাল মারা বামপন্থীদের ও মনে হয় নি !!!উল্টে তাঁর হত্যাকারীর রূহ এর শান্তির জন্য একাধিকবার কোরআন পাঠ করা হয়েছিল।কারো মুখ থেকে প্রতিবাদ শোনা যায় নি।স্টেইন্স ও তাঁর শিশু পুত্রদের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু/হত্যার তীব্র নিন্দা কিন্তু সর্বস্তরের হিন্দুরাই করেছিলেন। খ্রিস্টানরা বলার চেষ্টা করেছিলেন যে স্টেইন্স ধর্মান্তরিত করার কাজে লিপ্ত ছিলেন না। কিন্তু,পরবর্তী কালে এই বক্তব্য নস্যাৎ হয়ে যায়।

আসলে এই বামপন্থীদের স্মৃতি খুবই সিলেক্টিভ !!!তাঁরা স্টেইনসের মৃত্যুর কথা মনে রেখেছেন।কিন্তু ভুলে গিয়েছেন স্বামী লক্ষমনানন্দ র হত্যার কথা।ওনাকে হত্যা করাটা বোধহয় খুবইপ্রগতিশীল কাজ ছিল !!!!

অপরদিকে ভারতীয়রা যে বড়ই অতীত বিস্মৃত জাতি তা তো বলাই বাহুল্য।কারণ,তা না হলে পাকিস্তান গঠনের সমর্থক বামপন্থীরা ভারতীয় রাজনীতিতে করে কম্মে খেতে পারে !!!!

আর ঐ গ্রাহাম স্টেইনিস হত্যা মামলা; একবার ভেবে দেখুন বামপন্থীদের কাছেই ওনার বিরুদ্ধে কোন প্রমান নেই তবুও তাকে অভিযুক্ত করতে হবে উনি বামপন্থার বদলে ভারতীয় পরম্পরার পূজারী বলেই।
আর সেবার কাজকে বিকল্প সেবাকাজের মাধ্যমেই সেবানিবৃত্ত করা সম্ভব কোন ভাবেই সেবাকাজের বিকল্প হিসেবে হিংসা জনপ্রিয়তা পেতে পারে না, যদি না ঐ সেবা কাজের পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।

বামপন্থীরা এটা মনে রাখল যে গ্রাহাম স্টেইনিস হত্যার সময় উনি ওড়িশার বজরং দলের প্রধান ছিলেন কিন্তু এটা চেপে গেল যে ঐ হত্যা মামলার 13 জন অভিযুক্তই সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং মূল অভিযুক্ত দারা সিং ভারতীয় আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন; এবং ঐ সাজাদান হয়েছে বাজপেয়ী সরকারের আমলেই অর্থাৎ প্রাইভেট লিমিটেড কংগ্রেস আর তাদের দোসর বাবামপন্থীদের মত বিজেপি অন্তত সরকারে দলতন্ত্র কায়েম করেনি।

ও হ্যাঁ,একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম।প্রতাপ চন্দ্র সারাঙ্গী ওই সময় বজরং দলের প্রধান ছিলেন বলে “হত্যাকারীদের প্রধান দলনেতা”।তা মরিচঝাঁপিতে প্রশাসনের তরফ থেকে যে হত্যা কান্ড চালানো হয়েছিল সেই হত্যাকাণ্ডের প্রধান দলনেতা যেন কে ছিলেন ?ওটা তো আর সাঁইবাড়ি,বিজনসেতুর মত গণ রোষের তত্ত্ব দিয়ে বা,বানতলা র মত ছেলেধরার তত্ত্ব দিয়ে এড়ানো যাবে না !!!

আবারও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে উনি যে ওড়িশার সীমান্তবর্তী ময়ূরভঞ্জ ও বালেশ্বর জেলায় গণ শিক্ষা মন্দির যোজনার অধীনে অসংখ্য বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন সেটাও বাবাবুদের (বাঙালি বামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের) অজনা এটা বেশ কষ্টকল্পনা। আসলে হয়তো প্রাইভেট লিমিটেড কংগ্রেস ও তাদের পরিপূরক বামপন্থীদের কাছে দেশদ্রোহিতার শিক্ষা ব্যাতীত কোন শিক্ষাই ঠিক শিক্ষা বলে পরিগণিত হয় না।

দ্বৈপায়ন আর্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.