মোদীর গুজরাত আছে, তালিকায় নেই বাংলা, রাজ্যে রাজ্যে ভিন্‌দেশিদের নাগরিকত্ব, রিপোর্ট শাহী দফতরের

আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের অমুসলমানদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে। এমন ক্ষমতা আগেই দেশের ৮ রাজ্যের ২৯ জেলাকে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে গুজরাতের মেহসানা ও আনন্দ জেলা। এর ফলে এখন দেশের নয় রাজ্যের ৩১ জেলার জেলাশাসকের হাতে রয়েছে এই ক্ষমতা। নির্দেশ অনুযায়ী, ইসলাম ছাড়া ছ’টি ধর্মালম্বীদের কথা বলা রয়েছে। অর্থাৎ, ওই দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি এবং খ্রিস্টান নাগরিকরা ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পারেন শরণার্থী হিসাবে। এক বছরে এই সব রাজ্যে প্রায় দেড় হাজার ভিন্‌দেশি সংখ্যালঘু নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট।

নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার রয়েছে, ওই ৩১ জেলার জেলাশাসকের হাতে। তবে সেই তালিকায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের কোনও জেলা নেই। একই ভাবে নেই অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও জেলাও। ৩১ জেলাকে এই অধিকার দেওয়ার যে কাজ হচ্ছে তাও সামনে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রকাশিত ২০২১-২২ সালের বার্ষিক রিপোর্ট থেকে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন দেশের ১,৪১৪ জন সংখ্যালঘু ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে এর মধ্যে গুজরাতের পরিসংখ্যান নেই। কারণ, ওই রাজ্যের দুই জেলাকে সম্প্রতিই নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক বছরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ (সিএএ) নিয়ে অনেক রাজনৈতিক চাপান-উতোর হয়েছে। লোকসভা ও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে খুব আলোচিত হয়েছে সিএএ। পশ্চিমবঙ্গেও তা দেখা গিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ৯ রাজ্যের ৩১ জেলাকে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে তা ১৯৫৫ সালের আইন অনুযায়ী।

গুজরাত যুক্ত হওয়ার আগে এই তালিকায় ছিল রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানা, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ও মহারাষ্ট্র। এই যে নির্দেশ তা সিএএ নিয়ে না হলেও ফের সেই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে রাজনৈতিক আলোচনায়। গুজরাতের প্রসঙ্গ টেনে বুধবারই কৃষ্ণনগরে মন্তব্য করেছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বাংলায় ক্যা (সিএএ) করবে বলছে। কোথা থেকে করবে? যদি মানুষের কাছে ভোটাধিকার না থাকে, তাঁরা যদি নাগরিকই না হন, তা হলে এত ভোট নিয়ে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন কী ভাবে? আমিই বা কী করে মুখ্যমন্ত্রী হলাম!’’

রাজ্যে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। মাঝে এক বছর বাদ দিলেই লোকসভা ভোট। তার আগে সিএএ প্রসঙ্গ যে নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলেছে। গুজরাতে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আগে দুই জেলাকে নাগরিকত্ব প্রদানের অধিকার দেওয়ার মধ্যে বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছে বিরোধীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.