ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় মিলতে পারে বাজেটে, ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের

আসন্ন সাধারণ বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় মিলতে পারে মধ্যবিত্তদের। শনিবার অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

সরকারের মেয়াদের শুরুতেই আয়করের হার কমানো ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় খুব একটা প্রচলিত নয়। বরং অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে, সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে যখন পরের ভোট প্রায় আসন্ন তখনই ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় দিয়ে ভোটারদের খুশি করার চেষ্টা বেশি হয়।

কিন্তু কথায় বলে, ঠ্যালায় পড়লে কত কী না হতে পারে!

তেমনই মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটেই ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় মেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে নির্মলা সীতারামন বলেন, “সরকার বাজারে চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সেজন্য যা যা করা যেতে পারে তাই তাই করছে বা করার কথা ভাবছে। ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় দেওয়ার ভাবনা তারই মধ্যে অন্যতম।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তা হলে কি ধরে নেওয়া যায় যে বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করে ছাড়ের ঘোষণা থাকবে। নির্মলা হেসে জবাব দেন, “সেজন্য বাজেট ঘোষণা পর্যন্ত আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে”।

বাজারে চাহিদার সঙ্গে ব্যক্তিগত আয়করের কী সম্পর্ক?

অর্থনীতিকদের অনেকেই মনে করেন, এই দু’য়ের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ঘরোয়া অর্থনীতির বৃদ্ধির হার এখনই খুবই কম। গত ২৬ টি ত্রৈমাসিক বা ৭৮ মাসের মধ্যে এই প্রথম জিডিপি তথা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। তার প্রধান কারণ হল, শহর ও গ্রামীণ বাজারে চাহিদা কম। ফলে উৎপাদন কম হচ্ছে। এমনকী মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার দুই তৃতীয়াংশও উৎপাদিত হচ্ছে না। শিল্পোৎপাদনের হারও কম। তাতেই অধোগতি হচ্ছে অর্থনীতির। ব্যক্তিগত আয়করে কিছুটা ছাড় দিলে মানুষের হাতে খরচ করার মতো টাকা বাড়বে। তা খরচ করলে বাজারে চাহিদা বাড়বে। সুতরাং তাতে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে।

শুধু ব্যক্তিগত আয়করে ছাড়ের ইঙ্গিত দিয়ে এদিন থেমে থাকেননি নির্মলা। তিনি বলেন, বাজারে চাহিদা বাড়াতে ব্যাঙ্কগুলিও এগিয়ে এসেছে। গত দু’মাসে তারা ৫ লক্ষ কোটি টাকার মতো ঋণ দিয়েছে। তা ছাড়া সরকারের উপর ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস ও আস্থা বাড়াতে পণ্য পরিষেবা কর কাঠামো আরও সরল করার কথা ভাবছে সরকার।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কথায়, পণ্য পরিষেবা কর এর আগে যেভাবে কমানো হয়েছে তা সুচিন্তিত ছিল না। সবাই বলছে কর কমাতে হবে, তাই কমানো হয়েছে। কিন্তু তাতে জটিলতা বেড়েছে। গোটা প্রক্রিয়া সরল করে তিন ধরনের সুনির্দিষ্ট এবং গ্রহণযোগ্য কর হার স্থির করলে আশা করা যায় তা ভাল ফল দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.