চলতি বছরের শেষ মন কি বাত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ভাষণে বারবার উঠে এল করোনা পরিস্থিতিতে দেশ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, এই কঠিন সময়েও দেশ একতা দেখিয়েছে। সেটা জনতা কার্ফু হোক বা করোনা যোদ্ধাদের সম্মান দেখিয়ে থালা বাজানো বা অকাল দেওয়ালী পালন করা। গত এক বছরে দেশবাসী এক অভাবনীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে। করোনার জেরে আমাদের জীবন যাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক, স্যানিটাইজার আমাদের জীবনধারণের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে করোনার রাশ টানার পরও যেন এই অভ্যাস থেকে যায় তার দিকে নজর রাখতে হবে বলেও পরামর্শ মোদির। পাশাপাশি আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে বিদেশী নির্ভরতা কমানোর আর্জিও জানালেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনার জন্য দুনিয়ায় অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু আমরা নতুন সংকল্প নিয়েছি। এর নাম আত্মনির্ভরতা। এই বিষয়ে মোদির পরামর্শ, আপনারা ভেবে দেখুন কোন কোন বিদেশী দ্রব্য অজান্তেই আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। সেগুলির একটা তালিকা তৈরি করে ফেলুন। এরপর সেই দ্রব্যের ভারতীয় বিকল্প কি সেটা খুঁজে বার করে ব্যবহার করুন। ভারতীয়দের হাতে কঠোর পরিশ্রমে তৈরি পণ্যের ব্যবহার তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি দেশও আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। এটাই দেশের জন্য ‘নিউ ইয়ার রেজোলিউশন’ নিতে হবে। শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিল্পকর্তাদের কাছে আর্জি জানাচ্ছি। এখন দেশ অনেক বদলেছে এই অবস্থায় তাঁদের পণ্যগুলি যেন বিশ্বস্ত থাকে।
গোটা ভাষণে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তিনি দেশের সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন মন কি বাত অনুষ্ঠানে। যেমন তামিলনাড়ুর এক ৯২ বছরের বৃদ্ধের কম্পিউটারের ওপর বই লেখার ঘটনা, কোয়েম্বাটুরের নাবালিকার কুকুরদের জন্য হুইলচেয়ার বানানো বা উত্তরপ্রদেশের জেলবন্দিরা যারা শীতের কথা মাথায় রেখে গরুর জন্য জামা বানাচ্ছেন। আবার গুরুগ্রামের একদল যুবক হিমালয়ে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনা পরিস্কারের সংকল্পের কথা বা কর্ণাটকের নবদম্পতির সমুদ্র সৈকত পরিস্কার করা প্রসঙ্গ তুলে সকলকেই এই ধরণের কাজে এগিয়ে আসার আর্জি জানান। মোদি জানান, দেশে লেপার্ডের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, এটা ভালো লক্ষণ। তাঁর দাবি, ২০১৪ সালে দেশে লেপার্ডের সংখ্যা ৭,৯০০ ছিল। ২০১৯ সালে সেটা বেড়ে হয়েছে ১২,৮৫২।