‘দূর্ণীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের গণ আদালতে বসিয়ে বিচার করা হবে’ সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে লেখা মাওবাদী পোষ্টার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ালো বাঁকুড়া জেলার জঙ্গল মহলে। সোমবার সারেঙ্গার বি.এল.আর.ও অফিসের দেওয়ালে ‘সিপিআই(মাওইস্ট) দের নামে লেখা বেশ কিছু পোষ্টার স্থানীয় মানুষ দেখতে পান। তারাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পোষ্টারগুলি খুলে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে।
শাসক দলের ‘দূর্ণীতিগ্রস্ত নেতাদের গণ আদালতে বিচারের’ হুমকির পাশাপাশি মাওবাদীদের নামাঙ্কিত ওই পোষ্টারে বিজেপিকে ‘সাবধান’ করে এন.আর.সি-র বিরোধীতা, ‘ঘুষখোর পুলিশ অফিসারদের চিহ্নিতকরণ’ করে গণ আদালতে বিচারের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ, কেন্দ্র-রাজ্য মিলিতভাবে চিটফাণ্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরতের দাবীর পাশাপাশি মাওবাদীদের তরফে জঙ্গল মহলবাসীকে ‘লাল সেলাম’ জানিয়ে ‘তৃণমূল ও পুলিশের’ সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। আবার কোনও পোষ্টারে বেকার যুবক-যুবতীদের নেতাদের পিছনে না ছুটে ‘গণ আন্দোলনে’ অংশ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। যার মাধ্যমে নিজেদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করাই মূল উদ্দেশ্য বলে অনেকে মনে করছেন।
২০১১ পূর্ববর্ত্তী সময়ে মাওবাদীদের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল বাঁকুড়ার সারেঙ্গা। সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএম নেতা শিবরাম সৎপতিকে মাওবাদীদের হাতে খুনের মাধ্যমে মাওবাদীরা এই এলাকায় প্রথম তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করে। পরে সারেঙ্গা থানায় কর্মরত ওসি রবিলোচন মিত্র সহ তিন জন পুলিশ কর্মী খুন হন।
ধারাবাহিক মাওবাদী কার্যকলাপ রুখতে যৌথ বাহিনীর টহলদারী শুরু হয় এলাকা জুড়ে। যদিও ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলে মাওবাদিদের কর্মকাণ্ডের ছবি আর দেখা যায়নি। এদিন ফের এলাকায় মাও পোষ্টার উদ্ধার ঘিরে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও পোষ্টার উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই পোষ্টারগুলি মাওবাদীরা লাগিয়েছে কিনা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বলে তিনি জানান।