লোকসভা ভোটে জনতার রায় প্রকাশ পাওয়ার ঠিক একদিন পরে “মানি না” কবিতা লিখলেন। শুক্রবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কবিতাটি প্রকাশ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো স্বয়ং। এই কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হারের যন্ত্রণা। লোকসভা ভোটে ৩৪টি আসন পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসকে এবার থামতে হয়েছে বাইশে। অপরদিকে ২ আসন থেকে বিজেপি সরাসরি উঠে এসেছে ১৮ তে। যদিও কবিতার সারমর্ম, “এই হারকে তিনি স্বীকার করেন না।” কবিতার ছত্রে ছত্রে রয়েছে বিজেপির জয়ের প্রতি তীব্র কটাক্ষ। কবিতার কোনও অংশে লেখা হয়েছে, ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে এই জয় এসেছে। কোথাও আবার লেখা হয়েছে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে মসনদ দখল করতে। বৃহস্পতিবার গণনা ট্রেন্ড বুঝতে পেরেই একটি টুইট করেছিলেন মমতা। সেখানে তার ব্যাখ্যা ছিল,, “জয়ীদের অভিনন্দন। সব পরাজিতরাই হেরো নয়। পুরো গণনা শেষ হোক, ভিভি প্যাট মিলিয়ে দেখা হোক। তারপর পর্যালোচনা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব।” অর্থাৎ বিজেপির জয়কে প্রথম দিন থেকেই মান্যতা দিতে চাননি তৃণমূল নেত্রী। অথচ গণতন্ত্রের বিরোধী মতকে সম্মান দেওয়া রীতি, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। নিজের ভাবনা অন্য রাজ্যের বিরোধী ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে কবিতাটি বাংলা ছাড়া ওই হিন্দি ও ইংরেজিতে প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেসের ডিজিটাল সেল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর লেখা “মানি না” কবিতা আম জনতার কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, তৃণমূল নেত্রী বা তাদের নেতৃত্ব নরেন্দ্র মোদী এই জয়কে মানতা না দিলেও গোটা দেশের মত কিন্তু তেমনটা নয়। এমনকি প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসেরও নয়। কারণ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এআইসিসি সভাপতি রাহুল গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে সৌজন্যের রাজনীতি বহাল রেখেছে। কিন্তু বাংলায় এই সৌজন্যের রাজনীতি হারিয়েছে গত ৮ বছরে। উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার প্রথম দু’বছরের মধ্যেই বিধানসভায় সিপিএমের মহিলা বিধায়কদের পিটিয়েছিলেন তৃণমূলের মন্ত্রী বিধায়করা। তাই তাদের কাছ থেকে সৌজন্যবোধ আশা করাটা ভুল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এমন জয়ের পরও তাঁকে অভিনন্দন জানানোর বদলে “মানি না” কবিতা লিখে নিজের ট্রাডিশন বজায় রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
2019-05-24