আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত নতুন বছরের প্রথম দিনে মহাত্মা গান্ধীকে “বড় হিন্দু দেশপ্রেমিক” হিসাবে সম্বোধন করে একটি বই প্রকাশ করবেন।
১লা জানুয়ারি,রাজঘাটে, মোদী সরকারের মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী *প্রহ্লাদ প্যাটেল* এবং *ভি মুরালিধরন* লেখক জে.কে. বাজাজ এবং এম ডি শ্রীনীবাস-এর লেখা *মেকিং অফ আ হিন্দু প্যাট্রিয়ট* বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
মোহন ভাগবত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি বই প্রকাশ করেছিলেন,যেখানে গান্ধীজির ভারত নিয়ে যে স্বপ্ন ছিল সেটা তুলে ধরেছিলেন। ভাগবত বলেছিলেন, “গান্ধীজি বহুবার নিজেকে *কট্টর ‘সনাতনী হিন্দু’* বলে দাবি করেছিলেন। তিনি নিজে হিন্দু হিসেবে কখনও লজ্জা পাননি।
জে.কে.বাজজ হলেন *সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজের* প্রতিষ্ঠাতা এবং *ভারতীয় সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কাউন্সিলের* সদস্য । এমডি শ্রীনীবাস হলেন *সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজের* প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি।
বাজাজ আই এ এন এস কে বলেছিলেন, “গান্ধীজী জন্মগত হিন্দু ছিলেন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকাতে তাঁর অভিজ্ঞতা ওনাকে একজন কট্টর হিন্দু বানিয়েছিল।এই হিন্দু হওয়ার বিষয়টা ঠিক কী ছিল? দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াইয়ের সময় তিনি এই বিষয়টি শিখেছিলেন। গান্ধীজী প্রকাশ্যে বলতেন, *আমার দেশপ্রেম বাড়ছে এবং এই দেশপ্রেমটি আমার ধর্ম থেকেই উদ্ভূত হয়েছে”*।
বাজাজ বলেছিলেন যে খ্রিস্টান ও মুসলিম বন্ধুরা যখন দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস করার সময় মহাত্মা গান্ধীকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল তখন মহাত্মা গান্ধী প্রত্যাখাত করেন। এই সময়ে তিনি সনাতন ধর্ম সম্পর্কে গভীরভাবে অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন যা তাঁর হিন্দু পরিচয়কে আরও জোরদার করে।
বইটি গান্ধীর ‘হিন্দ স্বরাজ’ এর পটভূমি দেয়। গান্ধিজির ব্যক্তিত্বের বিকাশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতে থাকার সময় তিনি যে প্রচার চালিয়েছিলেন সেগুলি থেকে শুরু করে অনেক আকর্ষণীয় বিবরণ রয়েছে। এই বইটিতে জোহানসবার্গের এম্পায়ার থিয়েটারে ১১ ই সেপ্টেম্বর, ১৯০৬ সালের ঐতিহাসিক সভায় গান্ধীজি কীভাবে ‘সত্যগ্রহ’ শুরু করেন তার বর্ণনা করা হয়েছে। ‘দক্ষিণ আফ্রিকার জেল ডায়েরি’ শীর্ষক অধ্যায়ে গান্ধীজি ও তার সমর্থকদের কারাগারে নির্যাতন সহ্য করার ঘটনাও বলা হয়েছে। বইটিতে মহান রাশিয়ান লেখক এবং দার্শনিক লিও টলস্টয় এবং মহাত্মা গান্ধীর মধ্যে যোগাযোগের বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে। বইটিতে বলা হয়েছে যে টলস্টয়ই প্রথম মহাত্মা গান্ধীকে ‘হিন্দু দেশপ্রেমিক’ উপাধি দিয়েছিলেন। বইটিতে এও দাবি করা হয়েছে যে টলস্টয় তাঁর ‘হিন্দু দেশপ্রেম’ বাদ দিয়ে গান্ধীজির সব কিছুর ভক্ত ছিলেন। ১৯১৪ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে গান্ধীজির আগমনকালে দুটি বৈঠকের বিষয়েও এতে তথ্য পাওয়া যায়, যেখানে তিনি ‘দেশপ্রেমিক মহাত্মা’ উপাধি পেয়েছিলেন।
অতনু লাহা