বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন হিউমিক অ্যাসিড

বন্ধুরা আজকের দিনে চাষের সব থেকে বড় সমস্যা ফাঙ্গাস, ধানের জমিতে যে পরিমাণ ফাঙ্গাস লাগে তাতে অন্য কোন ফসল হলে এক কুইন্টাল ফসল ও পাওয়া সম্ভব হতো না, কিন্তু ধানের অসীম ক্ষমতা তাই তাও প্রোডাকশন হয়। সারা ভারতেই ধানের শিকড় লাল বা রুট রটিং এর সমস্যায় ভুগছে, আর এই কারণেই ধানের প্রোডাকশন এই বর্ষায় বিঘা প্রতি পাঁচ কুইন্টাল হতেই দম ছুটে যায়। তবুও ধান হয় কারণ নতুন করে শিকড় বের হতে থাকে প্রথম দুই- আড়াই মাস খুব বেশি হলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সাদা শিকড় থাকে না, গাছ পাতা থেকেই খাবার সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত কিছু ধানের ফলন দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধানের শিকড় 5% ও যদি সুস্থ রাখতে পারেন তাহলে প্রোডাকশন এখনের থেকে 20-25% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। গাছের শিকড়কে ঠিক রাখতে নিম্নলিখিত সারটি বাড়িতে তৈরী করে ব্যবহার করুন আলের নীচে জল নেমে গেলে আপনার জমিতে, সে আপনি জৈব চাষ বা রাসায়নিক চাষ যাই করুন না কেন।

মনে রাখবেন ধানের প্রোডাকশনের রেকর্ড এক একরে 60 কুইন্টালের বেশি ভারতে, এবং সেটা সঠিক জৈব চাষের পদ্ধতি ফলো করেই। ভবিষ্যতে কিভাবে সেটা আপনিও করতে পারেন সেটা শেখানোর ইচ্ছে আছে। কিন্তু আপাতত এই পদ্ধতিতে নিম্নোক্ত সার টি জমিতে দিন, এতে বহু উপকারী ব্যকটেরিয়া আর হিউমিক অ্যাসিড আপনার ধানের ফলন বাড়াবেই বাড়াবে।

বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন #হিউমিক_অ্যাসিড

প্রথমে বলে নিই হিউমিক অ্যাসিড ঠিক কি সুবিধা করে আপনার গাছের.. প্রথমত এটি আপনার গাছের শিকড় কে সুস্থ সবল করে দিতে পারে, নরমাল গাছের যতোটা শিকড় হবে হিউমিক অ্যাসিড দেওয়া গাছের শিকড়ের সংখ্যা আর লেন্থ প্রায় দ্বিগুণ আশা করতেই পারেন।
দ্বিতীয়ত শিকড় বেশি হবার কারণে সারের খরচ অনেকটাই কম হতে পারে, আর ফলন ও বেশী হবার সম্ভাবনা। আর শিকড় ভালো মানে গাছের গ্রোথ ও যথেষ্ট পরিমাণে ভালো হবে। আসুন শিখে নিই এই গ্ৰোথ প্রোমোটার টি কিভাবে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারবেন 😊!

বানানো পদ্ধতি :

500 গ্ৰাম চালের ভাত তৈরী করুন, ফ্যান সহ ভাত কে ঠান্ডা করুন, চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় এটি ঠান্ডা হয়ে যাবে। এর পর এই ফ্যান সহ ভাত একটি মাটির হাঁড়ি বা কলসী তে ভরে একটা মাটির সরা বা নারকেলের মালা চাপা দিয়ে দিন। এর পর এই হাঁড়ি বা কলসী যেকোনো মিস্টি ফলের গাছের তলায় বড়ো গর্ত খুঁড়ে ঢুকিয়ে মাটি চাপা দিয়ে দিন। পুরো কলসী টাই যেন মাটির নিচে থাকে। আর গর্ত টাকে একটু জল দিয়ে হালকা ভিজিয়ে দিন।

এই অবস্থায় কলসি টা কে তিন থেকে সাত দিন রাখুন তারপর মাটির নিচে থেকে বের করে নিন।

এবার ঐ ফ্যান ভাতের সাথে 12 লিটারের মতো জল মিশিয়ে ভালো করে চটকে একটা সুতির কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিন। ভাতের মন্ড টা পুকুরে ফেলে দিন ওটি মাছের খাদ্য হয়ে যাবে, আর ছাঁকা জল টাই আপনার সর্বোত্তম কোয়ালিটির হিউমিক অ্যাসিড। এই পদ্ধতিতে বানানো হিউমিক অ্যাসিড একটা প্লাস্টিকের বোতলে ছিপি এঁটে রাখুন। ছয় মাস পর্যন্ত এটার গুনমাণ একই রকম থাকবে।

বাজারে হিউমিক অ্যাসিড মোটামুটি ভাবে 300-1000 টাকা কিলো/ লিটার। এই পদ্ধতিতে তৈরী হিউমিক অ্যাসিডের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি বাজারের কেনা হিউমিক অ্যাসিডের থেকে প্রায় দ্বিগুণ, খরচ ম্যাক্সিমাম 2 টাকা প্রতি লিটার।

যেকোনো গাছের ক্ষেত্রেই এটি দারুন উপকারী। কিচেন গার্ডেন থেকে মাঠের চাষ সবেতেই ব্যবহার করুন। ডিরেক্ট ও ব্যবহার করতে পারেন আবার জলের সাথে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন 😊।

ধন্যবাদ 🙏।

আত্মনির্ভর_চাষী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.