গত কয়েক দশকে হয়তো এই প্রথম বার এমন পরিস্থিতি। দু’টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে, তা নিয়ে দৃশ্যত কোনও উৎসাহ নেই। ট্রেনে, বাসে, চায়ের দোকানে কোনও আলোচনাও নেই। অথচ এই পরিস্থিতি সর্বভারতীয় রাজনীতির যে এক তাৎপর্যপূর্ণ সময় সে বিষয়ে কোনও সংশয় নেই!
তবে আপাতত বিশ্লেষণ পাশে থাক। ঘটনা হল, আজ সোমবার মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। সেই সঙ্গে ১৮টি রাজ্য মিলিয়ে বিধানসভার মোট ৫১টি আসনে উপ নির্বাচন হবে। তা ছাড়া দু’টি লোকসভা আসনেও উপ নির্বাচন হবে আজ।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ২৮৮টি আসন রয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি-শিবসেনার জোট সরকার। এ বারও সেখানে বিজেপি-শিবসেনা জোট গড়ে লড়ছে। বিজেপি ১৬৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। শিবসেনা প্রার্থী দিয়েছে বাকি আসনে। বিরোধী শিবিরেও বরাবরের মতোই জোট হয়েছে। কংগ্রেস ১৪৭টি আসনে এবং এনসিপি ১২১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
অন্যদিকে হরিয়ানার ৯০ টি বিধানসভা আসনেও আজ ভোট গ্রহণ হবে। গত ভোটে হরিয়ানায় ৪৮ আসনে জিতে সরকার গড়েছিল বিজেপি। তারপর এ বার লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১০টি আসনের মধ্যে ১০টিতেই জিতেছে তারা। এ বারও এখানে বিজেপি-র মূল লড়াই সরাসরি কংগ্রেসের সঙ্গেই।
এমনিতে ভোটের গ্রহণের দিন কোনও পূর্বানুমান করা কাজের কথা নয়। তবে ঘটনা হল, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা দুই রাজ্যেই এ বার আম ধারনা হল বিজেপি-ই ফের সরকার গড়তে চলেছে। কংগ্রেস লড়াইয়ে থেকেও যেন নেই। তারা যেন হারার আগেই হেরে বসে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সহ বিজেপি-র তাবড় নেতারা যখন দুই রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচার করেছেন, তখন দেখা গিয়েছে কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ কলহে দীর্ণ। রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রে মাত্র ৬টি সভা করেছেন। সনিয়া গান্ধী হরিয়ানায় প্রচারে যাবেন বলেও যাননি। এবং এই প্রথম মহারাষ্ট্র ভোটে কংগ্রেস ও এনসিপি-র কোনও যৌথ জনসভা হয়নি। অনেকের মতে, কংগ্রেস এ ভাবে খেলাটা প্রায় ছেড়ে দেওয়াতেই কোনও প্রতিযোগিতার পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। ফলাফল যাই হোক, ভোটের আগে অন্তত মানুষের কাছে এই বার্তা গিয়েছে যে খেলাটা একপেশে হচ্ছে। কী পরিণাম হতে চলেছে তার দেওয়াল লিখন পরিষ্কার।
মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় ভোটের ফল ঘোষণা হবে ২৪ তারিখ বৃহস্পতিবার। ওই দিন সবকটি উপ নির্বাচনেরও ফল ঘোষণা হবে। সবচেয়ে বেশি উপ নির্বাচন হবে উত্তরপ্রদেশে। সেখানে বিধানসভার ১১টি আসনে উপ নির্বাচন হবে। এ ছাড়া গুজরাত, অসম, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ সহ ১৮টি রাজ্যে দুটো-তিনটে করে আসনে উপ নির্বাচন রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভার চারটি আসনে উপ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে উৎসবের পরিবেশের কারণে বাংলায় উপ নির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, নদিয়ার করিমপুর সহ ওই চার আসনে উপ নির্বাচন ঘোষণা করে দেওয়া হবে।