“সুশান্তের পরিবার যেহেতু সিবিআই তদন্তের আরজি জানানোর জন্য বিহার সরকারকে সবুজ সংকেত দিয়েছে, তাই পাটনায় কৃষ্ণ কুমার সিংয়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা সিবিআই তদন্তের আরজি জানাচ্ছি”, মন্তব্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের (Nitish Kumar)।
সূত্রের খবর, সুশান্তের বাবাই নাকি সম্প্রতি সিবিআই তদন্তের দাবিকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন এবার। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর একমাস পর কেন এই দাবি তুললেন কেকে সিং? অনেকেই এই প্রশ্ন তুলেছেন। এপ্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, অভিনেতার আত্মহত্যার মাস তিনেক আগে যখন মুম্বই পুলিশকে সুশান্তের কথা জানানো হয়েছিল, তখন তারা কোনওরকম পদক্ষেপ করেননি। আর তাই হয়তো তাঁর ছেলেকে এভাবে অকালে চলে যেতে হয়েছে। কৃষ্ণ কুমার সিং আপাতত মেয়ের কাছেই রয়েছেন। পুত্র বিয়োগের শোক সইতে না পেরে তাঁর শরীরও যথেষ্ট খারাপ। তাই এতদিন পর এসব নিয়ে কথা বলছেন তিনি। জানিয়েছেন সুশান্ত ঘনিষ্ঠরাই।
সুশান্ত ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। দিন দুয়েক আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছিলেন, “সুশান্তের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিং যিনি পাটনার রাজীব নগর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন, তিনি যদি নিজে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান, তাহলে এই বিষয়ে আলাদা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবে বিহার সরকার।” তার রেশ ধরেই এবার সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আরজি জানালেন নীতীশ।
অন্যদিকে, শনিবারই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, “সুশান্তের মৃত্যুটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না দয়া করে!” অন্যদিকে সুশান্ত মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে সরব হয়েছিলেন মনোজ তিওয়ারি, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, স্বামী সুব্রহ্মন্যম-সহ গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতামন্ত্রীরা। অতঃপর বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির পর যে সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) মৃত্যু যে রাজনৈতিক ময়দানেও একটা ‘হুমকিবাণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বোধহয় আর চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন পড়ে না!
প্রথমত, বিহারের নির্বাচন আসন্ন। সমীক্ষা বলছে, নীতীশের জনপ্রিয়তা তুলনামূলক কমেছে। যাকে নড়বড়ে গদির ইঙ্গিত বললেও অত্যুক্তি করা হয় না! দ্বিতীয়ত, সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে মহারাষ্ট্র বনাম বিহার কাজিয়া। সেই সুবাদে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, ঘরের ছেলে সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে যেহেতু বিহারবাসীর একটা আলাদা আবেগ রয়েছে, সেই কথা মাথায় রেখেই কি কখনও বিহার পুলিশের তৎপরতা আবার কখনও নীতিশ কুমারের গলায় সিবিআই তদন্তের জন্য দরজা খোলা রাখার বার্তা? ভূমিপুত্রের আকস্মিক মৃত্যুকেই কি নির্বাচনের জন্য হাতিয়ার করে তুলছে নীতীশ কুমার সরকার? এমন প্রশ্ন কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না একেবারেই।