আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই ফের বৈঠকে ভারত চিন সেনা কমান্ডাররা

আদৌও সমাধান সূত্র মিলবে। সন্দিহান ভারত। কারণ ইতিমধ্যেই কর্পস কমান্ডার স্তরে পাঁচটি বৈঠকে বসেছে ভারত ও চিন। কোনও লাভ হয়নি। মুখে সমাধান ও শান্তির কথা বললেও, সীমান্তে কিন্তু সেই নিজের অবস্থানেই রয়েছে চিনা সেনা।

এই পরিস্থিতিতে ফের কর্পস কমান্ডার স্তরের বৈঠক হতে চলেছে ভারত ও চিনের মধ্যে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বৈঠক হবে বলে ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর। এদিন নয়াদিল্লিতে ভারতের অবস্থান ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক চলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তাঁর নেতৃত্বেই বৈঠক চলে। উপস্থিত ছিলেন সিডিএস বিপিন রাওয়াত।
সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে সরার বিষয়ে অনড় ভারত।

এদিকে, বিশ্বের কোনও শক্তি সীমান্তে ভারতকে পেট্রলিং ও পাহাড়া দেওয়া থেকে বিরত করতে পারবে না। সমান জোর ও শক্তি নিয়ে পেট্রলিং চালাচ্ছে ভারত। কংগ্রেস সাংসদ এ কে অ্যান্টনির প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সাফ জানান একথা। বৃহস্পতিবার অ্যান্টনি প্রশ্ন তোলেন সীমান্তে পেট্রলিং কি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। তারই উত্তরে এমন জানান রাজনাথ।

এদিন রাজনাথ জানান লাদাখে ভারতীয় ভুখন্ডের ৩৮ হাজার বর্গ কিমি জুড়ে চিন সেনার অবস্থান। রাজ্যসভায় তিনি বলেন যে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে অন্তত ৩৮,০০০ বর্গ কিমি এলাকা বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে চিন। এর পাশাপাশি তথাকথিত ১৯৬৩-র Sino-Pakistan Boundary Agreement অনুযায়ী পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫১৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পাকিস্তান চিনকে দিয়েছে ফের মনে করিয়ে দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এদিন নয়াদিল্লিতে যে বৈঠক হয়েছে, তাতে গোটা দেশের সীমান্ত পরিস্থিতিই নিয়ে আলোচনা চলে। অর্থাৎ শুধু লাদাখ সীমান্ত নয়, অরুণাচল প্রদেশে চিনা সেনার দখলদারি মনোভাব নিয়েও আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে। সংবাদসংস্থা এএনআই সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ডোকলাম পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হয় এদিনের বৈঠকে।

সীমান্ত জুড়ে চিনা সেনার অবস্থান, নেপাল ও ভুটানের মাটিকে ব্যবহার করে ভারতের বিরোধিতা করার চিনা পরিকল্পনার বিষয়ে এদিন কথা হয়। রাশিয়ায় এসসিও সম্মেলনে কর্পস কমান্ডার স্তরে ভারত চিন বৈঠক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, পরে সেই বৈঠকে চিনের অনীহা প্রকাশ নিয়েও কথা হয় এদিন।

উল্লেখ্য সংসদের বাদল অধিবেশন ইতিমধ্যেই সরগরম ভারত চিন সংঘাত ইস্যুতে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল। উত্তাপের গভীরতা খতিয়ে দেখতে জম্মু কাশ্মীর সফরে গিয়েছেন সেনা প্রধান এম এম নারাভানে।

সূত্রের খবর পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখার কথা তাঁর। খতিয়ে দেখবেন ভারতীয় সেনার প্রস্তুতি ও অবস্থানের বিষয়টি। এছাড়াও জম্মু কাশ্মীরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন সেনা প্রধান বলে খবর। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকেও সেনাপ্রধান লাদাখ সফর করেছেন। এরই মধ্যে সীমান্তে সংঘাত মেটাতে পাঁচ বার সামরিক স্তরে বৈঠকে বসেছে ভারত ও চিন। কিন্তু লাভ হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.