কর্ণাটকে প্রতি মুহূর্তে আরও বেশি করে বিপদে পড়ছে কুমারস্বামী সরকার। এইচ নাগেশ নামে এক নির্দল বিধায়ক গত বছর মে মাসে কংগ্রেস-জে ডি এস জোটকে সমর্থন করেছিলেন। মাসখানেক আগে তাঁকে মন্ত্রীও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। সোমবার তিনি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিলেন। তার পরে সমর্থন করলেন বিজেপিকে। এর ফলে বিধানসভায় বিজেপি গরিষ্ঠতা পেয়ে যেতে পারে।
এইচ নাগেশ এদিন রাজ্যপাল বাজুভাই বালাকে দু’টি চিঠি দেন। প্রথম চিঠিতে বলেছেন, শ্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর নেতৃত্বে সরকার থেকে আমি সমর্থন তুলে নিচ্ছি। তার ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন। পরের চিঠিতে তিনি সরাসরি বিজেপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি লিখেছেন, বিজেপি যদি সরকার গড়ার দাবি জানায় আমি নিঃশর্তে সমর্থন জানাব।
গত শনিবার কংগ্রেসের আটজন ও জে ডি এসের তিনজন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে এসেছেন। স্পিকার এখনও রেজিগনেশন লেটারগুলি খতিয়ে দেখেননি। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দেখবেন। তিনি যদি নাগেশ সহ মোট ১২ বিধায়কের পদত্যাগ গ্রহণ করেন, তাহলে সরকার নিশ্চিতভাবেই বিধানসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।
কংগ্রেস-জে ডি এস জোট শেষবারের মতো চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে বিদ্রোহীদের বুঝিয়ে সরকারের পক্ষে ফের টেনে আনা যায়। মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী ব্যক্তিগত কাজে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। তিনি সফর কাটছাঁট করে রবিবার ফিরে এসেছেন। কংগ্রেস, কুমারস্বামী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, সকলেই আলাদা করে বিধায়ক ও মন্ত্রীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। অন্যদিকে দলত্যাগী ন’জন বিধায়ককে মুম্বইয়ের এক বিলাসবহুল হোটেলে রাখা হয়েছে। কংগ্রেস বা জে ডি এস তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না।
কর্ণাটকে বিএসপির মাত্র একজন বিধায়ক আছেন। তিনি সরকারের সমর্থক। নাগেশ ইস্তফা দেওয়ার পরে বিধানসভায় সরকার পক্ষের বিধায়কের সংখ্যা ১০৫। নাগেশের সমর্থনে বিজেপির পক্ষের বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ১০৬। সেক্ষেত্রে তারা সরকার গড়ার দাবি জানাবে।
এই পরিস্থিতিতে সরকারের ভরসা একমাত্র স্পিকার কে আর রমেশ কুমার। তিনি এখনও বিদ্রোহীদের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি। কংগ্রেসের ট্রাবল শুটার বলে পরিচিত ডি কে শিবকুমার বলেছেন, তাঁদের সঙ্গে নাগেশের যোগাযোগ আছে। সরকার এখনও বিপদে পড়েনি।
একটি সূত্রে খবর, বিদ্রোহীদের শান্ত করার করার জন্য কর্ণাটকের পুরো মন্ত্রিসভা ইস্তফা দিতে পারে। সেই জায়গায় মন্ত্রী করা হবে বিক্ষুব্ধদের। উপ মুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বিধায়কদের বিদ্রোহের জন্য বিজেপিকে দায়ী করেন। তিনি বলেছেন, আমরা জানি, বিজেপি কী করতে চায়। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা সকলেই ইস্তফা দেব। তার জায়গায় বিদ্রোহীরা মন্ত্রী হবেন।