কেরালার প্রথম আরএসএস প্রচারক আর হরি ৯৩ বছর বয়সে পরলোক গমন করলেন।
তিনি ছিলেন কেরালার প্রথম আরএসএস প্রচারক। আরএসএস অখিল ভারতীয় বৌদ্ধিক প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন বেশ কিছুদিন। বিভিন্ন ভাষায় তার লেখা বইয়ের সংখ্যা ৬০ টিরও বেশী। সেই প্রবীণ কার্যকর্তা রাঙ্গা হরি রবিবার সকালে কোচির একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯৩ বছর। ক্যান্সারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মৃতদেহ এর্নাকুলামের আরএসএস অফিসে রাখা হয়েছিল।
১৯৫১ সালে একজন পূর্ণকালীন কর্মী হিসাবে তার সাংগঠনিক জীবন শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি কেরালায় আরএসএস-এর প্রান্ত প্রচারক হন এবং তারপর ১৯৯০ সালে অখিল ভারতীয় সহ বৌদ্ধিক প্রধান হন। এক বছর পর তিনি বৌদ্ধিক প্রধানের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫ বছর বয়সে তিনি আরএসএসের নিয়ম অনুযায়ী তার সমস্ত দায়িত্ব থেকে খাতায়কলমে মুক্ত হয়ে যান। তবে এরপরও তিনি পরবর্তী দুই বছর সংগঠনের বিশেষ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
১৯৪৮ সালে গান্ধী হত্যার পর যখন আরএসএস নিষিদ্ধ করা হয় তখন বিএসসি অধ্যয়নরত রাঙ্গা হরি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কয়েক মাসের জন্য কারাবরণ করেন। তিনি একজন সুপরিচিত লেখকও ছিলেন। তিনি মালয়ালম, তামিল, হিন্দি, কোঙ্কানি, মারাঠি, সংস্কৃত, ইংরেজি, গুজরাটি, অসমীয়া এবং বাংলা সহ ১০টি ভাষা জানতেন এবং বিভিন্ন ভাষায় প্রায় ৬০টি বই প্রকাশ করেছিলেন।
১৯৩০ সালের ৫ই ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন রাঙ্গা শেনয়, একজন সহকারী হিসাবরক্ষক এবং মা পদ্মাবতী। তার বাবাও আরএসএসের স্বয়ংসেবক ছিলেন। তিনি কোচির সেন্ট অ্যালবার্ট এবং মহারাজাস কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজ জীবনেই আর হরি আরএসএস-এর কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন এবং অন্যরা তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন৷
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ একটি পোস্টে অমিত শাহ বলেছেন, “প্রয়াত হরি জি তার সমগ্র জীবন মানবতার সেবা, জাতি গঠন এবং আদর্শের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি মাতৃভূমির প্রতি অবদান রাখতে অনেক তরুণ স্বয়ংসেবককে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তার মৃত্যু সংগঠনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X এ বলা হয়েছে‚
“আমাদের শ্রী রাঙ্গা হরি জীর দুঃখজনক মৃত্যুতে আমরা একজন গভীর চিন্তাবিদ, কার্যকরী কর্মী‚ অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব এবং সর্বোপরি একজন স্নেহময় ও উৎসাহী প্রবীণকে হারিয়েছি। রাঙ্গা হরি জী তাঁর জীবন পরিপূর্ণ এবং অর্থপূর্ণভাবে কাটিয়েছিলেন। আরএসএস-এর অখিল ভারতীয় বৌদ্ধিক প্রধান থাকাকালীন তাঁর সংস্পর্শে আসা অনেক কর্মী আজ সারা ভারত জুড়ে তাঁর মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করবেন। তার অসুস্থতার দিনগুলিতে, তার শেষ দিনগুলিতে তিনি তার পরিস্থিতি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিলেন কিন্তু তিনি তার পড়া, লেখা এবং তাকে দেখতে আসা স্বয়ংসেবকদের আনন্দদায়ক পরামর্শ দেওয়ার কাজ বন্ধ করেননি। ১১ ই অক্টোবর, দিল্লিতে পৃথ্বী সুক্তের উপর শুধুমাত্র তাঁর ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছিল। এমনকি তাঁর কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি তাঁকে দেখতে আসা দর্শনার্থীদের মতামত শুনতেন এবং তার মুখের অভিব্যক্তি দ্বারা প্রতিক্রিয়া জানাতেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং RSS-এর পক্ষ থেকে তাঁর অনুপ্রেরণাদায়ক স্মৃতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা-পূর্ণ সমবেদনা জানাই এবং প্রয়াত আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।”
মোহন ভাগবত ড
সরসঙ্ঘচালক
দত্তাত্রেয় হোসাবলে
সরকার্যাভাঃ
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)