বাঁকুড়া জেলার তথা সারা রাজ্যের শিল্পের গ্রাম মানে কেঞ্জাকুড়া। বাঁকুড়া-১নং ব্লক ও বাঁকুড়া সদর থানার অধীনে এই গ্রাম। এখানে তিনটে শিল্পের জন্য বিখ্যাত, কাঁসা-বাসন, বাঁশের তৈরি খেলনা এবং তাঁতের গামছা। তবে সবচেয়ে অন্যতম হলো কাঁসা – বাসন। এই শিল্প জেলা ছাড়িয়ে তথা রাজ্য ছাড়িয়ে সারা ভারতবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত। কাঁসার তৈরি থালা বাটি গ্রাম বাংলার বিয়ে বাড়িতে এখনো প্রয়োজন হয়। কাঁসার জিনিসের আজও গুরুত্ব বিয়েবাড়িতে এমন কি ঠাকুরের পুজোতে ব্যবহার হয়। স্টিলের বাসনপত্র বাজারে আসার কারণে কাঁসার চল অনেকটাই কমেছে।এবং কাঁচা মালের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় তাদের বিক্রি বাটা অনেক কমে গেছে। এই কাঁসা শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষেরা বংশপরম্পরার এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বর্তমানে ঐতিহ্যপূর্ণ কাঁসা-শিল্প লুপ্তের পথে এগিয়ে চলছে। বাঁকুড়া জেলার অনেক গুলি গ্রাম এই পেশার সাথে যুক্ত। যেমন- মগরা, লালবাজার(মলিয়ান), হেল্না শুশুনিয়া, চাবড়া, অযোধ্যা, খাগড়া, চুয়ামসিনা ও আরও অনেক গ্রাম।
এই শিল্পের সঙ্গে আগে জড়িয়ে ছিল ৫০০ ইউনিট। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই ইউনিট কমে দাড়িয়েছে ৩২০ ইউনিটে। এই গ্রামে রয়েছে প্রায় ৭০০টি পরিবার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এরা যে পরিমাণে পরিশ্রম করে সেই অনুযায়ী মূল্য পায়না। ফলে অনেকেই এই রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যায়। কিন্তু যেসকল শিল্পীরা এখন গ্রামেই আছে তারা এখন অতি দুর্দশার সাথে দিন কাটাচ্ছে। কারন লকডাউনের জন্য কাজকর্ম বন্ধ প্রায় তিনমাস। ফিরে এসেছে রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া শিল্পিরা। কোন কাজকর্ম নেই তাই ধার দেনা করে চলছে এখন। ভরষা বলতে শুধুমাত্র রেশনের চাল গমের উপর । এই কাঁসা শিল্পের ওপর জড়িত যে সকল শিল্পীরা আছে তাদের দিকে সরকার যদি একটু নজর দেয়, তাহলে এই শিল্প এবং শিল্পীরা নতুন করে বাঁচার পথ খুঁজে পাবে ।
ছবি : অর্নিবান দাশ।