সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন দেশের শীর্ষ আদালতেরই এক মহিলা কর্মী। এই অভিযোগ সম্পুর্ণ অস্বীকার করেছেন প্রধান বিচারপতি। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, “দেশের বিচারব্যবস্থা সংকটে রয়েছে। আমাকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে।”
সম্প্রতি রঞ্জন গগৈ-এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন কর্মী। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক বিচারপতির কাছে হলফনামা দিয়ে এই অভিযোগ করেন ওই মহিলা। তাঁর করা অভিযোগের ভিত্তিতে জরুরি শুনানি ডাকেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের একটি স্পেশ্যাল বেঞ্চ। এই শুনানিতে উপস্থিত হয়ে নিজের বিরুদ্ধে হওয়া সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন গগৈ।
শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই ধরণের অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার জন্য আমি অত নীচে নামতে পারব না।” এমনকী তিনি অভিযোগ করেন, এটা পুরোটাই ষড়যন্ত্র। গগৈ বলেন, “এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এর পিছনে আরও কোনও বড় শক্তি রয়েছে। তারা চাইছে দেশের প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা কমিয়ে ফেলতে।” গগৈ আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি করার কথা রয়েছে তাঁর। তাঁকে প্রভাবিত করতেই এই তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গগৈ। তবে এরপরেও যে তাঁর কাজে কোনও গাফিলতি হবে না, তা তিনি জানিয়েছেন। গগৈ বলেন, “আগানী সপ্তাহে আমি আমার চেয়ারে বসে বিনা দ্বিধায়, বিনা ভয়ে আমার কাজটাই করব।”
এই শুনানিতে নিজের সততার প্রমাণও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “আমার অ্যাকাউন্টে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা আছে। এর থেকে বেশি টাকা আমার পিওনের অ্যাকাউন্টে আছে। ২০ বছর ধরে সততার সঙ্গে কাজ করার পর দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে এই পুরস্কারই কি আমার প্রাপ্য ছিল?”
এ দিনের শুনানির পর অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি বিচারপতিদের স্পেশ্যাল বেঞ্চ। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল একটি বিষয়। তাই এই বিষয়ে চটজলদি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। আরও শুনানি এবং সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখে তবেই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিচারপতিদের আরও আবেদন, এই বিষয় নিয়ে যেন সংবাদমাধ্যম রং চড়িয়ে কিছু না দেখায়। কারণ তাতে দেশের বিচারব্যবস্থার উপর মানুষের বিশ্বাস কমে যেতে পারে, এমনটাই বক্তব্য বিচারপতিদের স্পেশ্যাল বেঞ্চের।